আন্তর্জাতিক পেমেন্ট সেবা প্রতিষ্ঠান পেপ্যাল বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করতে আগ্রহী—এ তথ্য জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, এতে দেশের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, অনলাইন ব্যবসায়ী ও ফ্রিল্যান্সাররা বৈশ্বিক বাজারের সঙ্গে আরও সহজে যুক্ত হতে পারবেন।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ও চ্যানেল আই আয়োজিত ‘অ্যাগ্রো অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান। কৃষিখাতে বিশেষ অবদানের জন্য এবার ৮ ব্যক্তি ও ৩টি প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হয়। পাঁচ শতাধিক আবেদন যাচাই-বাছাই করে বিজয়ীদের নির্বাচন করা হয়।
গভর্নর জানান, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা ব্যাংকের এলসি ব্যবস্থার কারণে ছোট চালানে রপ্তানিতে প্রায়ই জটিলতায় পড়েন। পেপ্যাল চালু হলে ইউরোপ, আমেরিকা ও অন্যান্য দেশে পণ্য পাঠানো এবং মূল্য দেশে আনা দুটোই আরও সহজ ও দ্রুত হবে। তাঁর ভাষায়, আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম সক্রিয় হলে ক্ষুদ্র রপ্তানিকারকেরা বিশাল সুবিধা পাবেন।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, আন্তর্জাতিক পেমেন্ট গেটওয়ে না থাকায় আউটসোর্সিং ও ফ্রিল্যান্সিং–নির্ভর অনেক পেশাজীবী বিদেশ থেকে পারিশ্রমিক আনতে নানা সময় ভোগান্তিতে পড়েন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে পরিশ্রমের ন্যায্য মূল্যও পান না। পেপ্যাল চালুর মাধ্যমে এই সমস্যা অনেকটাই কমে আসবে।
পেপ্যাল বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম—যার মাধ্যমে অনলাইন লেনদেন, টাকা প্রেরণ–গ্রহণ, বিল পরিশোধসহ আন্তর্জাতিক কেনাকাটা দ্রুত সম্পন্ন করা যায়। এটি নিরাপদ লেনদেন, ক্রেতা–বিক্রেতা সুরক্ষা এবং রিফান্ড সুবিধার কারণে বৈশ্বিকভাবে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
অনুষ্ঠানে গভর্নর আহসান এইচ মনসুর নগদ লেনদেন কমানোর ওপর জোর দিয়ে বলেন, দেশের বেশির ভাগ দুর্নীতির সঙ্গে নগদ অর্থ লেনদেন সরাসরি জড়িত। পাশাপাশি তিনি জানান, শুধু টাকা ছাপাতে ও তা ব্যবস্থাপনায় বছরে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়। এ কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পর্যায়ক্রমে ‘ক্যাশলেস ট্রান্সেকশন’ বাড়ানোর দিকে জোর দিচ্ছে।
কৃষি খাতের ঋণপ্রবাহ বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে গভর্নর বলেন, বর্তমানে মোট ঋণের মাত্র ২ শতাংশ কৃষিখাতে যায়, যা ১০ শতাংশে উন্নীত করা জরুরি। এছাড়া এসএমই খাতে ২৫ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল থাকলেও ব্যাংকগুলোর সক্ষমতার ঘাটতির কারণে তা প্রত্যাশামতো বিতরণ হচ্ছে না।
খাদ্যশস্য উৎপাদনের অগ্রগতিও তুলে ধরেন গভর্নর। তিনি বলেন, স্বাধীনতার সময় দেশে খাদ্য উৎপাদন ছিল ১ কোটি ৩০ লাখ টন, যা এখন বেড়ে প্রায় ৪ কোটি টনে পৌঁছেছে। জনসংখ্যা দ্বিগুণ হলেও উৎপাদন তিনগুণেরও বেশি বৃদ্ধি একটি বড় অর্জন।
আরও সংক্ষেপ, বুলেট–ফরম্যাট, বা সংবাদপোর্টালের স্টাইলে চাইলে জানাবেন।

































