জিপিএ ফাইভে বোর্ডগুলোর মধ্যে বড় পার্থক্য

Published : ১১:২৩, ১৬ অক্টোবর ২০২৫
২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে, যা নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে উৎসাহের পাশাপাশি মিশ্র প্রতিক্রিয়াও দেখা গেছে।
এ বছর মোট ৬৯ হাজার ৯৭ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। আগের বছরের তুলনায় এই সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কম। এবারও সর্বাধিক জিপিএ-৫ অর্জন করেছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ১০টায় একযোগে দেশের সব শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট, সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং মোবাইল এসএমএসের মাধ্যমে ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশের ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের পাশাপাশি কারিগরি ও মাদ্রাসা বোর্ডসহ মোট ১১টি বোর্ডে গড় পাসের হার দাঁড়িয়েছে ৫৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ। তুলনামূলকভাবে দেখা যায়, ২০২৪ সালে পাসের হার ছিল ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ— অর্থাৎ এবারের ফলাফলে পাসের হার কমেছে প্রায় ১৯ শতাংশ।
জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যাতেও বড় ধরনের পতন ঘটেছে। গত বছর যেখানে এক লাখ ৪৫ হাজার ৯১১ জন শিক্ষার্থী সর্বোচ্চ গ্রেড পেয়েছিল, সেখানে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ৬৯ হাজার ৯৭ জন — যা আগের বছরের চেয়ে ৭৬ হাজার ৮১৪ জন কম।
বোর্ডভিত্তিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এবার সবচেয়ে বেশি জিপিএ-৫ পেয়েছে ঢাকা বোর্ডের শিক্ষার্থীরা— ২৬ হাজার ৬৩ জন। এরপর রয়েছে রাজশাহী বোর্ডে ১০ হাজার ১৩৭ জন, দিনাজপুর বোর্ডে ৬ হাজার ২৬০ জন, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৬ হাজার ৯৭ জন, যশোর বোর্ডে ৫ হাজার ৯৯৫ জন, মাদ্রাসা বোর্ডে ৪ হাজার ২৬৮ জন, কুমিল্লায় ২ হাজার ৭০৭ জন, ময়মনসিংহে ২ হাজার ৬৮৪ জন, বরিশালে ১ হাজার ৬৭৪ জন, কারিগরি বোর্ডে ১ হাজার ৬১০ জন এবং সিলেট বোর্ডে ১ হাজার ৬০২ জন শিক্ষার্থী।
ফলাফল জানার জন্য শিক্ষার্থীদের তিনটি পদ্ধতি রাখা হয়েছে।
১️⃣ অনলাইনে www.educationboardresults.gov.bd
ওয়েবসাইটে গিয়ে বোর্ডের নাম, রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়ে ফল জানা যাবে।
২️⃣ সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা পরীক্ষা কেন্দ্র থেকেও ফলাফল পাওয়া যাবে।
৩️⃣ মোবাইল এসএমএসের মাধ্যমে জানতে চাইলে লিখতে হবে— HSC <স্পেস> বোর্ডের প্রথম তিন অক্ষর <স্পেস> রোল <স্পেস> বছর এবং পাঠাতে হবে ১৬২২২ নম্বরে।
ফলাফল প্রকাশ উপলক্ষে সকাল ১০টায় ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভাও অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।
এদিকে, ফল পুনঃনিরীক্ষণের সুযোগ থাকছে ১৭ অক্টোবর থেকে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত। শিক্ষার্থীরা চাইলে অনলাইনে https://rescrutiny.eduboardresults.gov.bd
ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবে। শিক্ষা বোর্ড অফিসে সরাসরি আবেদন গ্রহণ করা হবে না।
প্রসঙ্গত, এ বছর দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মোট ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার জন্য ফরম পূরণ করেছিল। তাদের মধ্যে ৬ লাখ ১৮ হাজার ১৫ জন ছাত্র এবং ৬ লাখ ৩৩ হাজার ৯৬ জন ছাত্রী। সারাদেশে ২ হাজার ৭৯৭টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও প্রায় ২৭ হাজার শিক্ষার্থী শেষ পর্যন্ত পরীক্ষায় অংশ নেয়নি।
চলতি বছরের ফলাফলে সামগ্রিকভাবে পাসের হার কমলেও শিক্ষা বোর্ডগুলো বলছে, মূল্যায়নের কাঠামোয় বাস্তবভিত্তিক পরিবর্তন এবং কঠোর মূল্যায়ন নীতির কারণে ফলাফল বাস্তবতার কাছাকাছি এসেছে।
বিডি/এএন