বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলা থেকে নিখোঁজ হওয়া স্কুলছাত্রী নুসরাত জাহান সামিয়াকে প্রায় ২০ দিন পর রাজধানী ঢাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে উদ্ধার করেছে তার পরিবার। প্রশাসনের সহায়তায় গত ১৬ ডিসেম্বর তাকে উদ্ধার করা হয়।
জানা যায়, বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়নের লোহালিয়া গ্রামের বাসিন্দা স্কুলছাত্রী নুসরাত জাহান সামিয়া গত ২৬ নভেম্বর নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। দীর্ঘ সময় ধরে খোঁজাখুঁজির পরও কোনো সন্ধান না পেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে বাবুগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।
নিখোঁজের প্রায় ২০ দিন পর, ১৬ ডিসেম্বর দুপুরে সামিয়া একটি অপরিচিত নম্বর থেকে তার মায়ের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেন। সে সময় তিনি জানান যে তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন। ওই ফোনকলের সূত্র ধরেই পরিবারের সদস্যরা রাজধানীর উত্তরা এলাকায় যান।
সামিয়ার বড় ভাই সিয়াম হোসেন জানান, প্রশাসনের সহায়তায় ঢাকার উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের শহীদ মীর মুগ্ধ মঞ্চ সংলগ্ন সানগ্রাম এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে তার বোনকে উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে সামিয়ার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকা উত্তরা পশ্চিম থানার পুলিশের উপস্থিতিতে ওই বাসায় তল্লাশি চালিয়ে বাসার পরিচয় ও অন্যান্য বিষয় নিশ্চিত করা হয়।
উদ্ধারের পর নুসরাত জাহান সামিয়া জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টিকটকের একটি গ্রুপের মাধ্যমে তিন বান্ধবীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তাদের প্ররোচনায় তিনি গত ২৬ নভেম্বর পরিবারের কাউকে কিছু না জানিয়ে নগদ এক লাখ টাকা নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন। ঢাকায় পৌঁছে সিএনজি অটোরিকশাযোগে উত্তরা এলাকায় ওই কথিত বান্ধবীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
সামিয়া আরও জানান, ওই বান্ধবীরা তাকে পাঁচ হাজার টাকা মাসিক ভাড়ার শর্তে একটি রুম ভাড়া করে দেন এবং পরিবারের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ রাখতে চাপ দেন। একপর্যায়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে তার কাছে থাকা নগদ টাকার সিংহভাগ ওই চক্রটি নিয়ে নেয়।
তিনি বলেন, ভাড়া বাসায় ওই নারী চক্রের দুই সদস্য তার সঙ্গে অবস্থান করতেন। প্রায় ১৭ দিন পর তিনি বুঝতে পারেন যে তিনি একটি প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়েছেন। পরে সাহস সঞ্চয় করে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাকে উদ্ধারের ব্যবস্থা নেওয়া হয়। উদ্ধারের বিষয়টি আঁচ করতে পেরে ওই নারী চক্রের দুই সদস্য ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে বাবুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ এহতেশামুল ইসলাম উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, উদ্ধারের পর নুসরাত জাহান সামিয়া বর্তমানে পরিবারের কাছেই রয়েছেন এবং তিনি স্বাচ্ছন্দ্য ও নিরাপদ অবস্থায় আছেন।
