এক কলেজে এক পরীক্ষার্থী, তিনিও ফেল

এক কলেজে এক পরীক্ষার্থী, তিনিও ফেল ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১২:১৪, ১৭ অক্টোবর ২০২৫

রংপুরের পীরগাছা উপজেলার কান্দিরহাট স্কুল অ্যান্ড কলেজে এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় মাত্র একজন পরীক্ষার্থী অংশ নেন, আর তিনিও অকৃতকার্য হয়েছেন।

দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের প্রকাশিত ফলাফলে বিষয়টি স্পষ্ট হওয়ার পর স্থানীয়দের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে—অনেকেই মনে করছেন, প্রতিষ্ঠানের এই করুণ অবস্থার জন্য কলেজ প্রশাসন ও শিক্ষকরা সরাসরি দায়ী।

কান্দিরহাট স্কুল অ্যান্ড কলেজের ইতিহাস অনেক পুরোনো। ১৯৫৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির স্কুল শাখা এমপিওভুক্ত হলেও কলেজ অংশটি এখনো এমপিওভুক্ত হয়নি। ২০১১ সালে কলেজ শাখা চালু হয়। কলেজটিতে মানবিক, বিজ্ঞান ও বাণিজ্য বিভাগে মোট ১২ জন শিক্ষক থাকলেও চলতি বছর কেবল মানবিক বিভাগ থেকে একজন শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। অন্য দুই বিভাগে কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি ছিল না। প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, একমাত্র সেই পরীক্ষার্থীও পাস করতে পারেননি।

প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ এ বি এম মিজানুর রহমান বলেন, “কলেজটি এমপিওভুক্ত না হওয়ায় শিক্ষকরা বেতন পান না। ফলে তারা নিয়মিত ক্লাসে আসেন না, শিক্ষার্থী ভর্তি নিয়েও তেমন কাজ করেন না। আমি একাই চেষ্টা করে যাচ্ছি। প্রতিবছর নিজের পকেট থেকে টাকা খরচ করি—এবারও প্রায় ১ লাখ টাকা ব্যয় করে ১০৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করিয়েছি। কিন্তু এখনও স্বীকৃতি না পাওয়ায় হতাশার শেষ নেই।”

তিনি আরও বলেন, “এইচএসসির ফলাফল আমাদের জন্য হতাশাজনক ও লজ্জার। তবে আগামী বছর থেকে আমরা অবশ্যই ভালো ফল করতে চাই। ইতিমধ্যে শিক্ষার্থী ভর্তি বেড়েছে, আর আমরা তাদের মানোন্নয়নে বিশেষ উদ্যোগ নেব। কিন্তু স্বীকৃতি না পেলে এই পরিস্থিতি থেকে বের হওয়া কঠিন। শিক্ষকরা বেতন না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন; বেতন পেলে তারা আরও আন্তরিক হবেন।”

পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ মো. রাসেল বলেন, “এ বছর সারাদেশেই পাসের হার তুলনামূলক কম। কারণ সরকার এখন মানসম্মত শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে—আগের মতো গণহারে পাস নয়। মানসম্মত শিক্ষার দিকে পরিবর্তন আনতে গিয়ে এমন ফল এসেছে। তবে স্বীকার করতে হবে, পড়াশোনার মান এখনো প্রত্যাশিত হয়নি। আমরা এ বিষয়ে কাজ করছি।”

দীর্ঘ ঐতিহ্যবাহী এই প্রতিষ্ঠানের এমন অবস্থায় স্থানীয়রা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, দ্রুত কলেজ অংশের স্বীকৃতি ও শিক্ষকবেতনের ব্যবস্থা না করলে শিক্ষা ব্যবস্থায় আরও অবনতি ঘটবে।

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement