৪০ বছরের যাত্রা শেষে পর্দা নামাচ্ছে এমটিভি

৪০ বছরের যাত্রা শেষে পর্দা নামাচ্ছে এমটিভি ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১১:৫২, ১৭ অক্টোবর ২০২৫

সংগীত, ফ্যাশন ও তরুণ প্রজন্মের সংস্কৃতির প্রতীক হিসেবে দীর্ঘ চার দশকেরও বেশি সময় ধরে জনপ্রিয় থাকা মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেল এমটিভি (মিউজিক টেলিভিশন) এখন বড় পরিবর্তনের মুখে।

সময়ের চাহিদা ও দর্শক আচরণের পরিবর্তনের কারণে চ্যানেলটির যুক্তরাজ্য শাখার পাঁচটি চ্যানেল বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

এমটিভির মালিক প্রতিষ্ঠান প্যারামাউন্ট গ্লোবাল জানিয়েছে, চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর থেকে যুক্তরাজ্যে সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হবে ‘এমটিভি মিউজিক’, ‘এমটিভি ৮০স’, ‘এমটিভি ৯০স’, ‘ক্লাব এমটিভি’ এবং ‘এমটিভি লাইভ’ চ্যানেলগুলো। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, টেলিভিশন নেটওয়ার্ককে সংক্ষিপ্ত করে এখন থেকে মূলত ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে বিনিয়োগ ও কনটেন্ট সম্প্রসারণের দিকে জোর দেওয়া হবে।

১৯৮১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ‘আই ওয়ান্ট মাই এমটিভি’ স্লোগান নিয়ে আত্মপ্রকাশ করে এমটিভি। সংগীতপ্রেমীদের কাছে দ্রুতই এটি হয়ে ওঠে এক অনন্য মাধ্যম। এর হাত ধরেই সঙ্গীতজগতের ভিজ্যুয়াল রেভলিউশন শুরু হয়, তৈরি হয় অসংখ্য পপ আইকন। পরবর্তী সময়ে ১৯৯৬ সালে ভারতে এবং ১৯৯৭ সালে যুক্তরাজ্যে চালু হয় চ্যানেলটির সম্প্রচার।

একসময় এমটিভি শুধু একটি টেলিভিশন চ্যানেল ছিল না, বরং এটি হয়ে উঠেছিল তরুণদের ফ্যাশন, জীবনধারা ও সংস্কৃতির প্রতীক। পপ ও রক সংগীতের পাশাপাশি নাচ, রিয়্যালিটি শো এবং মিউজিক ভিডিও সংস্কৃতিরও নেতৃত্ব দিয়েছিল এই ব্র্যান্ড।

তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন এসেছে মিডিয়া জগতে। ইউটিউব, স্পটিফাই, টিকটক এবং সামাজিক মাধ্যমের দাপটে তরুণ প্রজন্ম এখন সংগীত ও বিনোদনের জন্য টেলিভিশনের পরিবর্তে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ঝুঁকছে। এ কারণে দর্শক হারিয়ে ধীরে ধীরে সংকুচিত হয়ে পড়েছে এমটিভির ঐতিহ্যবাহী টেলিভিশন নেটওয়ার্ক।

এমটিভির সাবেক ভিডিও জকি সিমোন অ্যাঙ্গেল বলেন, “এটা নিঃসন্দেহে এক দুঃখের সময়। এমটিভি শুধু গান নয়, ছিল নাচ, ফ্যাশন, সৃজনশীলতা আর তরুণদের মিলনস্থল।”

তবে এখনো এমটিভির একেবারে শেষ হয়নি। ভারতে এখনো সক্রিয় রয়েছে ‘এমটিভি ইন্ডিয়া’, যেখানে ‘রোডিজ’ এবং ‘স্প্লিটসভিলা’-এর মতো জনপ্রিয় রিয়্যালিটি শো তরুণ দর্শকদের আকৃষ্ট করছে। ডিজিটাল প্রতিযোগিতার মধ্যেও চ্যানেলটি সেখানে নিজের জায়গা ধরে রেখেছে, যদিও আগের মতো প্রভাব আর নেই।

এক সময় যে এমটিভি ছিল বৈশ্বিক সংগীত-সংস্কৃতির প্রতীক, সেটি এখন ডিজিটাল যুগে টিকে থাকার নতুন লড়াইয়ে নামছে।

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement