আখক্ষেতে বিমান বিধ্বস্ত, নিহত ১

আখক্ষেতে বিমান বিধ্বস্ত, নিহত ১ ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১৮:৫৬, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ব্রাজিলের আলাগোয়াস প্রদেশে একটি আখক্ষেতে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার অভিজ্ঞ পাইলট টিমোথি জেমস ক্লার্ক। তবে এই দুর্ঘটনাকে ঘিরে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। ধ্বংসাবশেষ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে প্রায় ২০০ কেজি মাদক কোকেন, যার বাজারমূল্য প্রায় ৮০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিস্ময়ের বিষয় এই কোকেনের প্যাকেটে ব্যবহার করা হয়েছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা স্পেসএক্স-এর লোগো।

ব্রাজিলিয়ান ফেডারেল পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) উপকূলবর্তী কোরুরিপ এলাকার একটি আখক্ষেত থেকে বিমানের ধ্বংসাবশেষ ও মাদক উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে, বিমানটি আন্তর্জাতিক মাদক চোরাচালান রুটের অংশ ছিল।

অভিযুক্ত পাইলট ও রহস্যঘেরা উড্ডয়ন
নিহত টিমোথি জেমস ক্লার্ক কোয়ান্টাস এয়ারলাইনসে দীর্ঘ দুই দশক ধরে পাইলট হিসেবে কাজ করেছেন। এছাড়া ভার্জিন অস্ট্রেলিয়া এবং স্পেসএক্সের কন্ট্রাক্টর হিসেবেও তার অভিজ্ঞতা ছিল। পরিচিতদের ভাষায় তিনি ছিলেন দক্ষ ও সুনামধন্য পাইলট। তবে তার এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা সবার মধ্যেই বিস্ময় জাগিয়েছে, কারণ তার বিরুদ্ধে আগে কোনো ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ ওঠেনি।

বিমানটি জাম্বিয়াতে এক ব্রাজিলীয় নাগরিকের নামে নিবন্ধিত হলেও, অন্তত দুই বছর ধরে ব্রাজিলেই পরিচালিত হচ্ছিল। এতে অতিরিক্ত জ্বালানি ট্যাংক থাকায় তদন্তকারীরা মনে করছেন, এটি দূরপাল্লার যাত্রার জন্য প্রস্তুত ছিল এবং সম্ভবত অস্ট্রেলিয়া বা ইউরোপের বাজারে কোকেন পৌঁছানোর উদ্দেশ্যেই এই উড্ডয়ন।

দুর্ঘটনার রহস্য ও তদন্তের অগ্রগতি
দুর্ঘটনার পর বিমানের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায় একটি বনাঞ্চলে। ধারণা করা হচ্ছে, ইঞ্জিন বিকল হওয়ার কারণে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। তবে কোনো বিপদ সংকেত পাঠানো হয়নি, ফলে প্রাথমিক উদ্ধারকাজও জটিল হয়ে ওঠে। ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা কোকেন ছিল আধা-প্রক্রিয়াজাত, যাকে "কোকেন পেস্ট" বলা হয়। এর ওজন প্রায় ১৮০ কেজি, যা খুচরা বাজারে পৌঁছালে অস্ট্রেলিয়াতেই এর মূল্য দাঁড়াত প্রায় ৮০ মিলিয়ন ডলার।

তদন্তে ব্রাজিল ও অস্ট্রেলিয়ার পুলিশ
ব্রাজিলের ফেডারেল পুলিশ, মাতো গ্রোসো সিভিল পুলিশ এবং অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল পুলিশ যৌথভাবে তদন্ত চালাচ্ছে। তারা খতিয়ে দেখছে, এই ঘটনায় স্থানীয় মাদক চক্র কিংবা আন্তর্জাতিক অপরাধ নেটওয়ার্ক জড়িত কি না। ব্রাজিলের প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিমানঘাঁটিগুলো অনেক দিন ধরেই মাদক পাচারের জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তদন্তকারীদের সন্দেহ, এবারও সেই নেটওয়ার্কের অংশ হিসেবেই এই ফ্লাইটটি পরিচালিত হচ্ছিল।

পরবর্তী পদক্ষেপ
এখন পর্যন্ত বিমানের প্রকৃত গন্তব্য বা প্রস্থানস্থল প্রকাশ করেনি কর্তৃপক্ষ। তবে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে পাইলট কীভাবে এমন বিপজ্জনক অপারেশনে যুক্ত হলেন, এর পেছনে কারা মূল পরিকল্পনাকারী এবং উদ্ধার হওয়া মাদক কোথায় সরবরাহ হওয়ার কথা ছিল সবকিছুই তদন্তের আওতায় এসেছে।

সূত্র: এনডিটিভি

BD/AN

শেয়ার করুনঃ
Advertisement