বাবাকে পিটিয়ে খুনের পর মরদেহ মাটিচাপা, নেপথ্যে উঠে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য

Published : ১৫:৪৫, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
কক্সবাজার সদরের খুরুশকুলে এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। পারিবারিক কলহকে কেন্দ্র করে ছেলের হাতে বাবার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, বাবা মোহাম্মদ ছৈয়দকে (৫০) পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহ বস্তায় ভরে গোপনে মাটিচাপা দেন ছেলে মোহাম্মদ রফিক। পরে পুলিশ স্থানীয়দের সহায়তায় মরদেহ উদ্ধার করে এবং অভিযুক্ত ছেলেকে গ্রেপ্তার করে।
ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার রাতে সদর উপজেলার দক্ষিণ ডেইলপাড়া কুরিমারিয়ারছড়া এলাকায়। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইলিয়াছ খান।
নিহত মোহাম্মদ ছৈয়দ ও অভিযুক্ত রফিক একই এলাকার বাসিন্দা। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে পরিবারটির ভেতরে দ্বন্দ্ব ও কলহ লেগেই ছিল। কয়েক বছর আগে নিহত ছৈয়দ পরিবারসহ উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবির থেকে এসে খুরুশকুলের কুরিমারিয়ারছড়া এলাকায় বসবাস শুরু করেন। পুরো পরিবারটি রোহিঙ্গা নাগরিক হিসেবে পরিচিত।
প্রতিবেশীদের বরাতে জানা যায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে বাসিন্দাদের মধ্যে সন্দেহ দেখা দেয়। কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজির পর ধানক্ষেতের পাশে সদ্য মাটি চাপা দেওয়া একটি জায়গা থেকে তীব্র গন্ধ বের হতে থাকে। সেখানে একটি শার্টও দেখা যায়। পরে বিষয়টি জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ জানানো হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মাটি খুঁড়ে বস্তাবন্দি অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করে।
এদিকে, গ্রেপ্তার রফিকের স্ত্রী শারমিন আক্তার জানান, সোমবার ভোরে তার শ্বশুর মসজিদে ফজরের নামাজ পড়ে বাড়ি ফেরেন। ফিরে এসে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়েন। পরে সেই ঝগড়ায় ছেলে রফিকও অংশ নেন। উত্তেজিত হয়ে রফিক লাঠি দিয়ে বাবাকে আঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হলে মরদেহ বস্তায় ভরে ঘরে রাখা হয়। পরদিন সেটি মাটিচাপা দেওয়া হয়।
শারমিন আরও বলেন, ঘটনাটি কাউকে জানালে তাকেও একই পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে হুমকি দেন তার স্বামী।
কক্সবাজার সদর থানার ওসি ইলিয়াছ খান জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় মরদেহ উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ছেলে মোহাম্মদ রফিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, মামলা রুজু করার পর অন্য কোনো অভিযুক্ত থাকলে তাদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
BD/AN