ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) অনুযায়ী মোট ৩৬ জন বাংলাদেশিকে ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ওড়িশা রাজ্যে ৩৫ জন এবং উত্তর–পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামে একজন বাংলাদেশি নাগরিকত্ব লাভ করেছেন।
ওড়িশা রাজ্য সরকারের উদ্যোগে আয়োজিত এক আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠানে নতুন নাগরিকদের হাতে নাগরিকত্বের সনদ তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝি বলেন, সিএএ নির্যাতিত ও বঞ্চিত সংখ্যালঘুদের জন্য নিরাপত্তা ও আশ্রয়ের একটি প্রতীক হিসেবে কাজ করছে।
সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে প্রণীত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের আওতায় বাংলাদেশ থেকে ভারতে আশ্রয় নেওয়া ৩৫ জন অভিবাসীকে গত বৃহস্পতিবার নাগরিকত্বের সনদ দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে ওড়িশায় সিএএর আওতায় নাগরিকত্ব পাওয়া মানুষের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫১ জনে। বর্তমানে রাজ্যটিতে আরও প্রায় এক হাজার ১০০টি আবেদন যাচাই–বাছাইয়ের বিভিন্ন ধাপে রয়েছে।
ওড়িশার জনশুমারি দপ্তরের তথ্যমতে, সদ্য নাগরিকত্ব পাওয়া ৩৫ জনই হিন্দু ধর্মাবলম্বী। ২০২৪ সালের ১১ মার্চ থেকে কার্যকর হওয়া বিধি অনুযায়ী, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে ভারতে প্রবেশ করা অমুসলিম ব্যক্তিরা ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারেন। এই বিধির আওতায়ই ওড়িশায় নতুন করে তাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, একই আইনের আওতায় আসামে প্রথমবারের মতো এক বাংলাদেশি নারী ভারতীয় নাগরিকত্ব পেয়েছেন। শ্রীভূমি জেলার বাসিন্দা ওই ৪০ বছর বয়সী নারী ২০০৭ সালে বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসেন।
শিলচরের সাবেক ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের সদস্য ও আইনজীবী ধর্মানন্দ দেব জানান, চিকিৎসার প্রয়োজনে শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসার সময় ওই নারীর সঙ্গে স্থানীয় এক যুবকের পরিচয় হয়। পরে তাদের মধ্যে বিয়ে হয় এবং এরপর থেকেই তিনি ভারতে বসবাস শুরু করেন। তাদের সংসারে একটি সন্তানও রয়েছে।
যদিও ওই নারীর পরিবারের সদস্যরা এখনো বাংলাদেশের চট্টগ্রামে বসবাস করেন, তবুও তিনি দীর্ঘদিন ধরেই ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে আসছিলেন। সিএএর বিধি কার্যকর হওয়ার পর তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেন।
ধর্মানন্দ দেব আরও জানান, নাগরিকত্ব আইন ১৯৫৫–এর ৫(১)(সি) ও ৬বি ধারার অধীনে নিবন্ধন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাকে নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে। এই বিধান অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি যদি একজন ভারতীয় নাগরিককে বিয়ে করেন এবং টানা সাত বছর ভারতে বসবাস করেন, তবে তিনি নিবন্ধনের মাধ্যমে ভারতীয় নাগরিকত্ব অর্জন করতে পারেন।

































