‘আমি বেঁচে থাকতে কেন মৃত ঘোষণা করা হলো?’ পুলিশের কাছে প্রশ্ন

‘আমি বেঁচে থাকতে কেন মৃত ঘোষণা করা হলো?’ পুলিশের কাছে প্রশ্ন ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১৪:২৬, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫

ভারতের ছত্তিশগড় রাজ্যের জশপুর জেলায় ঘটে যাওয়া এক বিস্ময়কর ও চাঞ্চল্যকর ঘটনায় পুরো রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ও বিচার ব্যবস্থার ওপর গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে।

গত ২২ অক্টোবর পুলিশ একটি অর্ধদগ্ধ মরদেহ উদ্ধার করে সেটিকে মৃত ঘোষণা করে। পরে তদন্তে মৃত ব্যক্তির পরিচয় সীতংগা গ্রামের বাসিন্দা সীবিত খাকা (৩০) হিসেবে নির্ধারণ করা হয়।

পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতি ও একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে আনুষ্ঠানিকভাবে মরদেহ শনাক্তের প্রক্রিয়াও সম্পন্ন হয়।

এই ঘটনার পর পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে, যাদের মধ্যে রামজিৎ রাম ও বীরেন্দ্র রাম উল্লেখযোগ্য। তারা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে স্বীকারোক্তিও দেন। ফরেনসিক পরীক্ষার মাধ্যমে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করে পুলিশ দাবি করে, মামলাটি ছিল সন্দেহাতীত ও প্রমাণসমৃদ্ধ।

কিন্তু ঘটনার মোড় ঘুরে যায় নাটকীয়ভাবে, যখন গত শনিবার রাতে ‘নিহত’ বলে ঘোষিত সীবিত খাকা নিজেই সিটি কোতোয়ালি থানায় হাজির হন এবং জানান, তিনি সম্পূর্ণ জীবিত। তিনি পুলিশকে বলেন, জীবিকার সন্ধানে তিনি ঝাড়খণ্ডে ছিলেন এবং মোবাইল ফোন না থাকায় দীর্ঘদিন পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। দেশে ফিরে এসে তিনি জানতে পারেন, তাকে কাগজে-কলমে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে এবং তারই ‘হত্যা’র অভিযোগে তার কয়েকজন বন্ধু কারাগারে রয়েছেন।

থানায় এসে ক্ষুব্ধ কণ্ঠে সীবিত খাকা প্রশ্ন তোলেন—তিনি জীবিত থাকা সত্ত্বেও কীভাবে তাকে মৃত ঘোষণা করা হলো? কেন ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়নি? কেন তার নির্দোষ বন্ধুরা জেলে বন্দি? তিনি অবিলম্বে তাদের মুক্তির দাবি জানান। একই সঙ্গে তিনি জানান, এই ঘটনার কারণে তার ছোট ছোট সন্তানরা তিন মাস ধরে ঠিকমতো খাবার পর্যন্ত পাচ্ছে না। একজন জীবিত মানুষকে মৃত ঘোষণা করা কেমন বিচারব্যবস্থা—এই প্রশ্নও তোলেন তিনি।

এই ঘটনা ছত্তিশগড়ের পুলিশি তদন্ত, ফরেনসিক প্রক্রিয়া ও বিচার ব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও নির্ভুলতা নিয়ে গুরুতর সন্দেহের জন্ম দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে জনমনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ ব্যাখ্যা ও দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি উঠেছে।

সূত্র: এনডিটিভি

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement