সন্তান লালন-পালনে কার্যকরী প্যারেন্টিং শৈলী

সন্তান লালন-পালনে কার্যকরী প্যারেন্টিং শৈলী ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ০০:৪৯, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সন্তানকে বড় করার পথে সবসময়ই বাবা-মায়ের সামনে আসে নানা চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে যখন সন্তানের মাঝে জেদ, অবাধ্যতা, আক্রমণাত্মক আচরণ কিংবা মনোযোগের ঘাটতির মতো সমস্যা দেখা দেয়, তখন বিষয়টি আরও কঠিন হয়ে পড়ে। এসব পরিস্থিতি সামলানোই হয়ে ওঠে অভিভাবকের মূল দায়িত্ব।

প্রত্যেকটি শিশু স্বতন্ত্রভাবে বেড়ে ওঠে, তাই তাদের আচরণও একে অপরের থেকে আলাদা। তবুও বিভিন্ন গবেষণা বলছে— নির্দিষ্ট কিছু প্যারেন্টিং স্টাইল শিশুর আচরণগত সমস্যা নিয়ন্ত্রণ ও মানসিক সুস্থতায় দারুণ ভূমিকা রাখে। এখানে থাকছে তিনটি কার্যকরী পদ্ধতির আলোচনা-

১. অথরিটেটিভ প্যারেন্টিং : স্নেহ ও শৃঙ্খলার মেলবন্ধন
আচরণগত সমস্যা সামলাতে অথরিটেটিভ পদ্ধতিকে সবচেয়ে কার্যকর ধরা হয়। এখানে যেমন শৃঙ্খলার কড়া সীমা নির্ধারণ করা হয়, তেমনি সহানুভূতি ও খোলামেলা আলোচনাকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়।

শাস্তি, ভয় বা কান্নাকাটির বদলে বাবা-মা সন্তানকে নিয়মের কারণ বোঝান এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে দিকনির্দেশনা দেন। যেমন— কোনো শিশু জেদ করলে অভিভাবক বলতে পারেন, “আমি বুঝতে পারছি তুমি কষ্ট পাচ্ছ, কিন্তু আমরা চিৎকার বা মারধর করব না। বরং বলো, আসল সমস্যাটা কী?” এই ভারসাম্যপূর্ণ আচরণ শিশুর মনে বিশ্বাস তৈরি করে এবং ধীরে ধীরে আত্মনিয়ন্ত্রণ ও সহযোগিতার মানসিকতা গড়ে তোলে।

পজি.টিভ প্যারেন্টিং : উৎসাহই প্রধান চালিকা শক্তি
পজিটিভ প্যারেন্টিং মূলত নেতিবাচক আচরণের শাস্তি না দিয়ে ভালো কাজের প্রশংসা ও উৎসাহ দেওয়াকে গুরুত্ব দেয়। কারণ, অনেক শিশু মনোযোগ পেতে উল্টো খারাপ আচরণ করে বসে। কিন্তু প্রশংসা, ছোট অর্জন উদযাপন কিংবা পুরস্কারের মাধ্যমে সেই মনোযোগকে সঠিক দিকে পরিচালিত করা সম্ভব।

উদাহরণস্বরূপ- যদি কোনো শিশু দীর্ঘ সময় হোমওয়ার্কে মনোযোগ ধরে রাখতে না পারে, তবে অল্প সময় মনোযোগ দিলে তাকে প্রশংসা করা বা ছোট কোনো সুযোগ-সুবিধা দেওয়া যেতে পারে। এতে তার আত্মবিশ্বাস বাড়বে এবং ভালো আচরণের সঙ্গে ইতিবাচক পরিণতির যোগসূত্র তৈরি হবে। ফলে ধীরে ধীরে নেতিবাচক অভ্যাস কমে যাবে।

৩. থেরাপিউটিক প্যারেন্টিং : ধৈর্য, ধারাবাহিকতা ও ট্রমা-সচেতন যত্ন
কিছু শিশু ঘন ঘন আচরণগত সমস্যা প্রকাশ করে তাদের অতীতের মানসিক চাপ বা ট্রমার কারণে। এই ধরনের ক্ষেত্রে থেরাপিউটিক প্যারেন্টিং কার্যকরী। এটি সাধারণত দত্তক বা পালক বাবা-মায়েরা ব্যবহার করেন। এখানে শান্ত স্বভাব, ধৈর্য, নিয়মিত রুটিন ও মানসিক নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।

উদাহরণস্বরূপ- শিশুর আচরণে বিরক্ত হয়ে রেগে যাওয়ার বদলে একজন থেরাপিউটিক অভিভাবক শান্ত থেকে সীমা নির্ধারণ করেন এবং পরে তাকে ভাবতে সাহায্য করেন, কী কারণে সে এমন আচরণ করল। এতে ঝগড়া এড়ানো যায় এবং শিশু শেখে কীভাবে নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়।

BD/AN

শেয়ার করুনঃ
Advertisement