দেশে বাক স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্ত করছে নানা গোষ্ঠী : আসিফ নজরুল

দেশে বাক স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্ত করছে নানা গোষ্ঠী : আসিফ নজরুল ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১৩:৪০, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সরকারের সমালোচনা করলে হামলা হচ্ছে কি না- এ প্রশ্নের জবাবে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, গত চার মাসে তার বিরুদ্ধে ১৭টি ভিডিও বানানো হয়েছে।

এমনকি ২০০ কোটি টাকার অনিয়মে জড়ানোর অভিযোগও তোলা হয়েছে। আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনামলে যত সমালোচনা তিনি সহ্য করেছেন, তার চেয়ে মাত্র সাত মাসেই আরও বেশি কটূক্তির শিকার হয়েছেন তিনি। তবুও এসবের বিরুদ্ধে কোনো আইনি পদক্ষেপ নেননি, মামলা করেননি কিংবা কাউকে গ্রেপ্তার করারও দাবি জানাননি।

একটি টকশোতে অংশ নিয়ে তিনি এসব মন্তব্য করেন।

আসিফ নজরুল বলেন, ‘‘আগে বাকস্বাধীনতার প্রতিপক্ষ ছিল স্বৈরাচারী সরকার ও তাদের ক্যাডাররা। কিন্তু এখন প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে নানা জনগোষ্ঠী। কেউ কাউকে ‘ধর্মান্ধ’ বা ‘ধর্মীয় উন্মাদ’ বলছে, কেউ আবার ‘নাস্তিক’ আখ্যা দিচ্ছে, আবার ভারত-পাকিস্তান দালাল বা শত্রুর তকমাও দিচ্ছে। বিপ্লব-পরবর্তী সময়ের মতোই সমাজে এখন অস্থিরতা, অনিশ্চয়তা ও শৃঙ্খলাহীনতা বাড়ছে।’’

আইনশৃঙ্খলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘মব জাস্টিস দমন করতে সরকারের যে দৃঢ় অবস্থান নেওয়ার দরকার ছিল, সেটার ঘাটতি রয়েছে। এ নিয়ে সমালোচনার যথেষ্ট কারণ আছে। আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি কখনো ভালো, কখনো খারাপ হয়েছে—এটা ওঠানামা করে। তবে সামগ্রিকভাবে অপরাধ প্রবণতা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আছে।’’

তার মতে, ‘‘যে সমাজ রক্ত ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে গড়ে উঠেছে, সেখানে কেন বর্তমান পরিস্থিতি তৈরি হলো-  এ প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই উঠছে। তাই অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা আরও প্রবলভাবে ধরা দিচ্ছে। প্রত্যাশিতভাবে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়নি কেন, সেটিও মানুষের মনে প্রশ্ন জাগাচ্ছে।’’

আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘প্রতিষ্ঠানগুলোর রাজনৈতিকীকরণই বড় সমস্যা। বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি রাজনৈতিক প্রভাব পড়েছে পুলিশ বাহিনীতে। বিশেষ করে গোপালগঞ্জ ও ছাত্রলীগ-সংশ্লিষ্টদের প্রভাবিত করে পুলিশে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ আছে। দীর্ঘ ১৫ বছর ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে পুলিশের উচ্চপর্যায় আওয়ামী লীগের প্রতি অনুগত ছিল। পরবর্তী সময়ে যারা বঞ্চিত ছিলেন, তাদের বড় পদে বসানো হলেও অভিজ্ঞতা ও স্বাধীনতার ঘাটতি ছিল। ফলে পুলিশে পেশাদারিত্ব ফেরানো কঠিন হয়ে পড়েছে।’’

শেষে তিনি যোগ করেন, ‘‘আইনশৃঙ্খলা প্রত্যাশিত মাত্রায় নিশ্চিত করা যায়নি, যদিও প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ধ্বংসপ্রায় একটি প্রতিষ্ঠানকে সংস্কার ও পুনর্গঠনের কাজ চলছে, আর এতে স্বাভাবিকভাবেই সময় লাগছে।’’

BD/AN

শেয়ার করুনঃ
Advertisement