মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে এক বিশেষ অভিযানে ১৯৯ জনকে আটক করা হয়েছে, যারা মধ্যে ১৯৬ জন বিদেশি নাগরিক ও তিনজন স্থানীয় নিয়োগকর্তা।
এই অভিযান শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাতে কুয়ালালামপুরের চৌকিত এলাকার জালান সুলতান আজলান শাহে পরিচালনা করে দেশটির ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্ট।
কুয়ালালামপুর ইমিগ্রেশনের পরিচালক ওয়ান মোহাম্মদ সওপি ওয়ান ইউসুফ জানিয়েছেন, কেএল স্ট্রাইক ফোর্সের অধীনে পাঁচটি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মোট ১৭০ জন কর্মকর্তা অভিযানে অংশ নেন। রাত ৯টা থেকে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত এই অভিযান চলে।
আটককৃতদের মধ্যে ১৫০ জন পাকিস্তানি, ২১ জন বাংলাদেশি, ১০ জন ভারতীয়, ৬ জন ইন্দোনেশীয়, ৪ জন নেপালি, ২ জন জর্ডানি, ২ জন ফিলিপিনো এবং ১ জন শ্রীলঙ্কান। এছাড়া অবৈধ অভিবাসী নিয়োগের অভিযোগে তিনজন মালয়েশিয়ান নারীও আটক হন।
ওয়ান মোহাম্মদ সওপি জানান, অভিযানে মোট ৪৫টি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে তল্লাশি চালানো হয় এবং অধিকাংশ স্থানেই অবৈধ বিদেশি শ্রমিক পাওয়া গেছে। নিয়োগকর্তারা বৈধ শ্রমিকের পাশাপাশি অবৈধভাবে বিদেশি কর্মী নিয়োগ করছিলেন। তিনি বলেন, যারা নিয়মিত এই ধরনের অপরাধে লিপ্ত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযানকালে অনেক অবৈধ অভিবাসী ধরা পড়ার হাত থেকে বাঁচার জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেছেন; কেউ পালানোর চেষ্টা করেছেন, কেউ কেঁদেছেন, আবার কেউ অসুস্থ বা ক্লান্ত ভান করেছেন।
ওয়ান মোহাম্মদ সওপি অবৈধ অভিবাসীদের চলমান ‘মাইগ্র্যান্ট রিপ্যাট্রিয়েশন প্রোগ্রাম’-এর সুযোগ গ্রহণের আহ্বান জানান। এই কর্মসূচির মাধ্যমে তারা স্বেচ্ছায় দেশে ফিরে যেতে পারবেন এবং কঠোর আইনি পদক্ষেপ এড়াতে পারবেন। অন্যথায়, ধরা পড়লে তাদের বিরুদ্ধে ইমিগ্রেশন আইন ১৯৫৯/৬৩ অনুযায়ী বিভিন্ন ধারায় মামলা করা হবে।
আইনের আওতায় রয়েছে বৈধ কাগজপত্র ছাড়া অবস্থান, অতিরিক্ত সময় থাকা এবং ভিজিট পাসের অপব্যবহার। নিয়োগকর্তাদের বিরুদ্ধেও অবৈধ অভিবাসীদের নিয়োগ ও আশ্রয় প্রদানের অভিযোগে তদন্ত চলছে। যদি অবৈধ আয়ের প্রমাণ পাওয়া যায়, তবে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
অভিযানে ইমিগ্রেশন পুত্রজায়া, সেলাঙ্গর, নেগেরি সেম্বিলান, রয়্যাল মালয়েশিয়ান পুলিশ (পিডিআরএম) এবং কুয়ালালামপুর সিটি হলসহ পাঁচটি সংস্থার কর্মকর্তারা অংশ নেন।
