ইউনিক ইস্টার্নের মালিক নূর আলীসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ইউনিক ইস্টার্ন (প্রা.) লিমিটেডের মালিক নূর আলীসহ মোট ১৪ জনের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ প্রতারণা ও অর্থ পাচারের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

এ মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানির নামে দীর্ঘদিন ধরে এই চক্রটি শ্রমপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে অবৈধভাবে অতিরিক্ত টাকা আদায় করেছে। সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

সিআইডির তথ্য অনুযায়ী, জনশক্তি রপ্তানি খাতে সক্রিয় সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য ইউনিক ইস্টার্ন (প্রা.) লিমিটেড। মালিক নূর আলীসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রায় ৪০ কোটি ৭১ লাখ টাকার বেশি অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ কারণে রাজধানীর গুলশান থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

কীভাবে প্রতারণা করা হয়েছে
তদন্তে উঠে এসেছে, ২০২২ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রায় দুই বছরে ইউনিক ইস্টার্ন (প্রা.) লিমিটেডের মাধ্যমে ৩,৭৮৭ জন কর্মীকে মালয়েশিয়ায় পাঠানো হয়। সরকারিভাবে জনশক্তি প্রেরণের ফি নির্ধারিত ছিল জনপ্রতি ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকা। কিন্তু অভিযুক্তরা প্রতি কর্মীর কাছ থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করেছে।

অতিরিক্ত টাকার অজুহাত হিসেবে পাসপোর্ট খরচ, কোভিড-১৯ টেস্ট ফি, মেডিকেল ফি ও পোশাক বাবদ খরচ দেখানো হয়। প্রকৃতপক্ষে এসব খাতে সরকারের নির্ধারিত ব্যয়ের বাইরে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে।

সিআইডির অনুসন্ধানে আরও তথ্য
অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, অভিযুক্ত ১৪ জন পরিকল্পিতভাবে যোগসাজশ করে প্রতারণা চালিয়েছে। এর মাধ্যমে তারা মোট ৪০ কোটি ৭১ লাখ ৪০ হাজার ৩৭০ টাকা অবৈধভাবে সংগ্রহ করেছে, যা স্পষ্টত মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর অধীনে অর্থপাচারের অপরাধের আওতায় পড়ে।

তদন্তের বর্তমান অবস্থা
সিআইডির ফাইন্যানশিয়াল ক্রাইম বিভাগ বর্তমানে মামলাটি তদন্ত করছে। অপরাধে জড়িত অন্যান্য অজ্ঞাত সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি পুরো ঘটনার পূর্ণাঙ্গ চিত্র উন্মোচন এবং শ্রমপ্রত্যাশী ভুক্তভোগীদের সঠিক তথ্য সংগ্রহের জন্যও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।