বড় বিপদে পড়তে পারেন যেসব জমি বিক্রি করলেই

বড় বিপদে পড়তে পারেন যেসব জমি বিক্রি করলেই ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ২২:২৯, ৫ ডিসেম্বর ২০২৫

বাংলাদেশে ভূমি সেবা এখন পুরোপুরি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে রূপান্তরিত হয়েছে, ফলে সাধারণ মানুষের ভূমি-সংক্রান্ত কাজগুলো আগের চেয়ে অনেক বেশি স্বচ্ছ, সহজ এবং জবাবদিহিমূলক হয়েছে।

তবে ডিজিটাল ব্যবস্থায় যুক্ত হওয়ার ফলে এমন বেশ কয়েকটি ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ জমির ওপর কড়া নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে, যেগুলোর লেনদেন নিরাপত্তা ও আইনি জটিলতার কারণে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

বর্তমানে মোট ৬ ধরনের জমি বিক্রি সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে এবং নিয়ম ভঙ্গ করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিষিদ্ধ ৬ ধরনের জমি হলো—

১. এজমালি বা অবিভক্ত জমি:
একাধিক মানুষের যৌথ মালিকানাধীন জমি কোনো মালিক এককভাবে বিক্রি করতে পারবেন না। সব মালিকের সম্মতি না থাকলে এ ধরনের জমি বিক্রি একেবারেই নিষিদ্ধ। তবে জমির বাটোয়ারা বা ভাগ-বাটোয়ারা সম্পন্ন থাকলে প্রত্যেকে তাঁর নিজস্ব অংশ বিক্রি করতে পারবেন।

২. জাল রেকর্ডের মাধ্যমে মালিকানা পাওয়া জমি:
অতীতে ভুয়া রেকর্ড তৈরি করে যেসব জমির মালিকানা নেওয়া হয়েছে, সেসব জমির বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। সাব-রেজিস্ট্রার যাচাই করে প্রয়োজন হলে রেজিস্ট্রেশন বাতিল করবেন এবং প্রতারণার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

৩. জাল নামজারি করা জমি:
ভুয়া নামজারি বা নকল কাগজপত্র তৈরি করে মালিকানা দাবি করা হলে ডিজিটাল সিস্টেম স্বয়ংক্রিয়ভাবে ওই জমির বিক্রির পথ বন্ধ করে দেবে।

৪. ভুয়া দাখিলাভিত্তিক দখল:
জাল দাখিলার মাধ্যমে জমি দখল বা মালিকানা দাবি করে বিক্রির চেষ্টা করলে সরাসরি আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

৫. জবরদখল করা জমি:
জোরপূর্বক বা ক্ষমতার অপব্যবহার করে দখল করা জমি আর কোনোভাবেই বিক্রি করা যাবে না। ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ আইন, ২০২৩ অনুযায়ী এ ক্ষেত্রে কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে।

৬. খাস জমি:
সরকারি মালিকানাধীন খাস জমি, যার ওপর অনেক ক্ষেত্রে ৯৯ বছরের বন্দোবস্ত দেওয়া হয়ে থাকে, তা বিক্রি করার কোনো আইনগত সুযোগ নেই। বিক্রি করার চেষ্টা হলে সেটি সরাসরি অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে, এবং বিক্রেতা ও ক্রেতা উভয়ই শাস্তির আওতায় পড়বেন।

ভূমি সেবার ডিজিটালাইজেশনের মূল লক্ষ্য হলো—স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা, হয়রানি কমানো এবং নাগরিকদের জন্য ভূমি সংক্রান্ত সেবা আরও সহজলভ্য করা। এই রূপান্তর সফল করতে সরকার প্রায় এক হাজার কোটি টাকার বাজেট বরাদ্দ করেছে।

সবশেষ সতর্কতা হিসেবে বলা যায়, জমি কেনার আগে অবশ্যই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে মালিকানা যাচাই করা জরুরি। সব তথ্য এখন কেন্দ্রীয় সিস্টেমে সংযুক্ত থাকায় জালিয়াতি বা অবৈধ মালিকানা গোপন করার সুযোগ প্রায় নেই। যথাযথ যাচাই-বাছাই ছাড়া জমি কিনলে প্রতারণার শিকার হওয়ার ঝুঁকি থেকেই যায়।

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement