২০২৬ সাল নিয়ে বাবা ভাঙ্গার নতুন বার্তা
Published : ১৮:১২, ৫ ডিসেম্বর ২০২৫
বিশ্বজুড়ে রহস্যময়তা, লোকবিশ্বাস আর অন্তহীন বিতর্কের আরেক প্রতীক বাবা ভাঙ্গা। বুলগেরিয়ার এই অন্ধ ভবিষ্যৎদ্রষ্টা মৃত্যুর বহু বছর পরও জনপ্রিয়তায় যেন আরও দৃঢ় হয়ে উঠেছেন।
তার নামে প্রচুর ভবিষ্যদ্বাণী ঘুরে বেড়ায়, যেগুলোর বেশিরভাগেরই কোনও প্রামাণ্য উৎস বা যাচাইযোগ্য নথি নেই। তবুও ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনার সময় তার ভবিষ্যদ্বাণীগুলো মানুষকে ব্যাপকভাবে আকর্ষণ করে।
২০২৬ সালকে ঘিরে সম্প্রতি আবারও কিছু কথিত ভবিষ্যদ্বাণীকে কেন্দ্র করে নতুন করে আগ্রহ দেখা দিয়েছে। নির্ভরযোগ্য তথ্য না থাকলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমে বিষয়গুলো আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।
নিচে জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে প্রচলিত বাবা ভাঙ্গার নামে পরিচিত ১০টি ভবিষ্যদ্বাণীর সারসংক্ষেপ নতুনভাবে তুলে ধরা হলো:
১. তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সম্ভাবনা
কথিত আছে, ২০২৬ সালেই নাকি শুরু হতে পারে এক ব্যাপক বৈশ্বিক সংঘাত। কোন দেশ এতে জড়াবে বা কীভাবে যুদ্ধের সূত্রপাত হবে—এ নিয়ে কোনো স্পষ্ট তথ্য নেই। বিশেষজ্ঞরা বরাবরই এসব দাবিকে ভিত্তিহীন অনুমান বলে বিবেচনা করেন।
২. ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ
মহাভূমিকম্প, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুত্পাত থেকে শুরু করে চরম আবহাওয়ার কথা বাবা ভাঙ্গার নামের সঙ্গে জনপ্রিয়ভাবে যুক্ত করা হয়। বলা হয়, বিশ্বের ৭–৮ শতাংশ ভূখণ্ড এতে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এই দাবিরও কোনো বিশ্বাসযোগ্য উৎস পাওয়া যায় না।
৩. মানুষের ওপর এআই–এর কর্তৃত্ব বৃদ্ধি
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানুষের নিয়ন্ত্রণ দুর্বল করে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে—এমন দাবি দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত। আধুনিক প্রযুক্তিবিদদের মতে, এটি মূলত ভবিষ্যতের প্রযুক্তি নিয়ে সাধারণ মানুষের উদ্বেগের প্রতিচ্ছবি।
৪. ভিনগ্রহবাসীর আগমন
২০২৬ সালকে মানবজাতির সম্ভাব্য প্রথম ‘এলিয়েন যোগাযোগ’-এর বছর হিসেবে উল্লেখ করা হয়ে থাকে অনেক আলোচনায়। বড় মহাকাশযানের আগমনের ধারণা বিজ্ঞানীদের কাছে সম্পূর্ণ কল্পনাভিত্তিক।
৫. রাশিয়ায় নতুন ক্ষমতাধর নেতার উত্থান
রাশিয়া থেকে এক নতুন শক্তিশালী নেতৃত্বের উত্থান নিয়েও এক ধরনের প্রচার রয়েছে। তবে ব্যক্তি, সময়, প্রেক্ষাপট—কোনোটিই এ বিষয়ে স্পষ্ট নয়।
৬. বৈশ্বিক অর্থনীতিতে বড় ধরনের ধকল
ব্যাংকিং ব্যবস্থায় অস্থিরতা, মুদ্রাব্যবস্থার পতন কিংবা ব্যাপক অর্থনৈতিক ধস—এসবও কথিত ভবিষ্যদ্বাণীর অংশ হিসেবে দেখা যায়। এসব দাবিরও কোনও যাচাইযোগ্য প্রমাণ নেই।
৭. সোনার দামে অস্বাভাবিক ওঠানামা
কারও কারও দাবি, সোনা হঠাৎ বহুগুণ দাম বাড়তে বা ভয়াবহভাবে কমে যেতে পারে। বিশেষজ্ঞরা এসবকে নিছক বাজারগুজব বলেই দেখেন।
৮. জলবায়ু বিপর্যয়ের নতুন মোড়
বন্যা, খরা, পরিবেশের ক্ষয়—এসব বিষয়ে বিজ্ঞানীরাও সতর্ক করে আসছেন। তবে এগুলোর সঙ্গে বাবা ভাঙ্গার ভবিষ্যদ্বাণীর সরাসরি সংযোগের নির্ভরযোগ্য কোনো প্রমাণ নেই।
৯. এশিয়ার প্রভাব বৃদ্ধি
চীনসহ কয়েকটি এশীয় দেশের উত্থান বিশ্বরাজনীতিতে নতুন ভারসাম্য সৃষ্টি করতে পারে—এ ধারণা নতুন নয়। তথাপি জনপ্রিয় সংস্কৃতির বয়ানে এটিও ভাঙ্গার নামে যুক্ত করা হয়।
১০. সামাজিক অস্থিরতার বিস্তার
প্রযুক্তি, পরিবেশ পরিবর্তন এবং রাজনৈতিক চাপ থেকে বৈশ্বিক অভিবাসন বৃদ্ধি ও সামাজিক অস্থিরতার সম্ভাবনাও প্রচলিত আলোচনায় উঠে আসে। আধুনিক বিশ্বের উদ্বেগ এগুলোকে আরও জনপ্রিয় করে তুলেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাবা ভাঙ্গার নামে প্রচারিত বেশিরভাগ ভবিষ্যদ্বাণীর কোনো লিখিত বা নির্ভরযোগ্য ভিত্তি নেই। তবু রহস্যময় গল্প, কৌতূহল আর সাংস্কৃতিক প্রভাবের কারণে এসব প্রচলিত ভবিষ্যদ্বাণী বিশ্বজুড়ে আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
২০২৬ সাল এসে গেলে এ দাবিগুলোর কোনোটির সঙ্গে বাস্তবতার সামান্য মিলও থাকে কি না—সে উত্তর সময়ই দেবে।
বিডি/এএন


































