এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা দল থেকে পদত্যাগ করেছেন। শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) দলের একাধিক দায়িত্বশীল নেতা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পদত্যাগের পর তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ঢাকা-৯ আসন থেকে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
পদত্যাগের সিদ্ধান্ত জানিয়ে এনসিপির দলীয় গ্রুপে দেওয়া এক বার্তায় তাসনিম জারা লেখেন, ‘প্রিয় সহযোদ্ধাগণ, আমি আনুষ্ঠানিকভাবে দল থেকে পদত্যাগ করেছি। গত দেড় বছরে আপনাদের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে অনেক কিছু শিখেছি। সেই অভিজ্ঞতার জন্য আমি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ। আপনাদের সবার জন্য রইল শুভকামনা।’
নিজের নির্বাচনী এলাকার ভোটারদের উদ্দেশে দেওয়া আরেক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘প্রিয় খিলগাঁও, সবুজবাগ ও মুগদাবাসী—আমি আপনাদেরই ঘরের মেয়ে। খিলগাঁওয়েই আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা।
একটি রাজনৈতিক দলের প্ল্যাটফর্ম থেকে সংসদে গিয়ে নিজের এলাকার মানুষ ও দেশের সেবা করার স্বপ্ন নিয়ে আমি রাজনীতিতে এসেছিলাম। তবে বর্তমান বাস্তবতায় কোনো নির্দিষ্ট দল বা জোটের প্রার্থী না হয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি আপনাদের ও দেশের মানুষের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম—আপনাদের জন্য এবং একটি নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তুলতে আমি লড়াই করব।
পরিস্থিতি যেমনই হোক না কেন, সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে আমি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সে কারণেই এই নির্বাচনে ঢাকা-৯ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চ্যালেঞ্জের কথাও তুলে ধরেন তাসনিম জারা। তিনি লেখেন, একটি রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হলে দলীয় অফিস, সুসংগঠিত কর্মীবাহিনী এবং প্রশাসনের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলার সুযোগ থাকে।
কিন্তু কোনো দলের সঙ্গে না থাকায় এসব সুবিধা তার থাকবে না। এমন পরিস্থিতিতে তার একমাত্র ভরসা এলাকার মানুষ। সততা, নিষ্ঠা ও নতুন ধারার রাজনীতি করার প্রত্যয়ে জনগণের ভালোবাসা ও সমর্থন পেলে তবেই তিনি সেবা করার সুযোগ পাবেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এ সময় তিনি দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের কথা জানান। প্রথমত, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে আইন অনুযায়ী ঢাকা-৯ আসনের ৪ হাজার ৬৯৩ জন ভোটারের সমর্থনসূচক স্বাক্ষর নির্ধারিত ফরমে সংগ্রহ করতে হবে।
আগামীকাল থেকেই এই স্বাক্ষর সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানান তিনি। মাত্র এক দিনে এত সংখ্যক স্বাক্ষর সংগ্রহ করা কঠিন উল্লেখ করে তিনি স্বেচ্ছাসেবী সহযোগিতা কামনা করেন এবং আগ্রহীদের একটি নির্দিষ্ট ফেসবুক গ্রুপে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানান।
দ্বিতীয়ত, সাম্প্রতিক সময়ে নির্বাচনী ফান্ডরেইজিংয়ের সময় যারা অনুদান দিয়েছেন, তাদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন—স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়াইয়ের সিদ্ধান্তের কারণে কেউ যদি অনুদানের অর্থ ফেরত নিতে চান, তাহলে তিনি সেটিকে সম্মানের সঙ্গে দেখবেন। বিকাশের মাধ্যমে অনুদান দেওয়া ব্যক্তিদের জন্য একটি নির্দিষ্ট ফরম পূরণ করার অনুরোধ জানান তিনি।
যাচাই শেষে অনুদানের অর্থ ফেরত দেওয়া হবে বলেও জানান। ব্যাংকের মাধ্যমে অনুদান দেওয়া ব্যক্তিদের জন্য ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া শিগগিরই জানানো হবে বলে উল্লেখ করেন তাসনিম জারা।





























