জামায়াতের সঙ্গে জোট চান না এনসিপির ৩০ নেতা, নাহিদ ইসলামকে স্মারকলিপি

জামায়াতের সঙ্গে জোট চান না এনসিপির ৩০ নেতা, নাহিদ ইসলামকে স্মারকলিপি ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ২১:১৭, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫

জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সম্ভাব্য রাজনৈতিক জোট বা আসন সমঝোতার বিষয়ে আপত্তি তুলেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় কমিটির ৩০ জন সদস্য। তারা এই ইস্যুকে দলীয় নীতিগত অবস্থান ও মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে উল্লেখ করেছেন।

শনিবার এ বিষয়ে দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের কাছে একটি লিখিত স্মারকলিপি দেন তারা। স্মারকলিপির শিরোনাম ছিল— ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের দায়বদ্ধতা ও দলীয় মূল্যবোধের আলোকে সম্ভাব্য জোট বিষয়ে নীতিগত আপত্তি’। এতে বলা হয়, এনসিপির প্রতিষ্ঠাকালীন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে তারা একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতিগত প্রশ্নে তাদের গভীর উদ্বেগ ও অবস্থান স্পষ্ট করতে চান।

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, সম্প্রতি জামায়াতে ইসলামীসহ আট দলীয় জোটের সঙ্গে রাজনৈতিক জোট বা আসন সমঝোতার সম্ভাবনা নিয়ে যে আলোচনা সামনে এসেছে, সে বিষয়ে তারা স্পষ্টভাবে আপত্তি জানাচ্ছেন। স্বাক্ষরকারীদের মতে, এই ধরনের উদ্যোগ এনসিপির রাজনৈতিক দর্শন ও আদর্শিক অবস্থানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

এনসিপির নেতারা জামায়াতে ইসলামী ও তাদের ছাত্র সংগঠন ছাত্র শিবিরের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উত্থাপন করেন। তারা দাবি করেন, এসব সংগঠনের বিভাজনমূলক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, অন্যান্য রাজনৈতিক দলের ভেতরে গুপ্তচরবৃত্তি ও স্যাবোটেজ, এবং এনসিপির ওপর বিভিন্ন অপকর্মের দায় চাপানোর অপচেষ্টা অতীতে দেখা গেছে।

এছাড়া, ছাত্র সংসদ নির্বাচন ঘিরে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) এবং পরবর্তী সময়ে ছাত্রশক্তি নিয়ে মিথ্যাচার ও অপপ্রচার চালানো হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তারা। স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, অনলাইন ফোর্স ব্যবহার করে এনসিপি ও দলটির নারী সদস্যদের চরিত্রহননের চেষ্টা করা হয়েছে এবং ধর্মকে কেন্দ্র করে সামাজিক ফ্যাসিবাদ মাথাচাড়া দেওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।

স্বাক্ষরকারীরা বলেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াতে ইসলামীর স্বাধীনতাবিরোধী ভূমিকা, গণহত্যায় সহযোগিতা এবং সে সময় সংঘটিত নানা অপরাধ বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক চেতনা ও এনসিপির মূল্যবোধের সঙ্গে মৌলিকভাবে সাংঘর্ষিক। এই বাস্তবতা উপেক্ষা করে কোনো ধরনের রাজনৈতিক সমঝোতা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

তাদের মতে, জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জোট করলে এনসিপির নৈতিক অবস্থান দুর্বল হবে এবং দীর্ঘমেয়াদে দলের রাজনৈতিক বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা, দেড় হাজার ব্যক্তির কাছে মনোনয়নপত্র বিক্রি, পরে ১২৫ জন প্রার্থী ঘোষণা এবং শেষ পর্যন্ত ‘অল্প কিছু আসনের’ জন্য জোটের পথে হাঁটার চিন্তা—এসব বিষয় জনগণের সঙ্গে প্রতারণার শামিল বলে তারা মনে করছেন।

সবশেষে, জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে কোনো ধরনের রাজনৈতিক জোটে না যাওয়ার বিষয়ে দলীয়ভাবে স্পষ্ট ও প্রকাশ্য অবস্থান নেওয়ার জন্য এনসিপির নেতৃত্বের প্রতি জোরালো আহ্বান জানান স্মারকলিপিতে স্বাক্ষরকারী ৩০ জন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য।

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement