বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের সাবেক তারকা পেসার জাহানারা আলম আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছেন।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি বিসিবির সাবেক নারী দলের ম্যানেজার ও বর্তমান নির্বাচক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জুর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন।
এর আগে তিনি অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতির বিরুদ্ধে সতীর্থদের প্রতি মারধর ও অমানবিক আচরণের অভিযোগ এনে সমালোচনার জন্ম দিয়েছিলেন। তবে এবার তার অভিযোগের বিষয় আরও সংবেদনশীল ও উদ্বেগজনক।
জাহানারা বলেন, নারী দলের দায়িত্বে থাকা সময় মঞ্জুরুল ইসলাম তার সঙ্গে অনৈতিক আচরণ করেছিলেন। নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, “একদিন উনি আমার কাছে এসে কাঁধে হাত রেখে বললেন, ‘তোর পিরিয়ডের কত দিন চলছে? শেষ হলে বলিস, আমার দিকটাও দেখতে হবে। পিরিয়ড শেষ হলে তখন চলে আসিস।’”
তার দাবি, এই ঘটনার পর তিনি একাধিকবার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)-এর কাছে অভিযোগ করেন, কিন্তু কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। জাহানারা বলেন, “দেড় বছর ধরে অসংখ্যবার আমি বিষয়টি জানিয়েছি। নারী উইংয়ের প্রধান নাদেল স্যারকেও (শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল) বলেছি। শুরুতে কিছুদিন পরিস্থিতি ঠিক থাকত, তারপর আবার একই রকম আচরণ শুরু হতো।”
এই অভিযোগ নিয়ে এখনও পর্যন্ত অভিযুক্ত মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু কিংবা বিসিবির পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। বোর্ডের অভ্যন্তরে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হলেও এখনো কোনো তদন্ত বা বিবৃতি প্রকাশ করা হয়নি।
ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে জাহানারার সাহসিকতাকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন এবং বিষয়টি নিয়ে স্বাধীন ও স্বচ্ছ তদন্তের দাবি তুলেছেন। আবার কেউ কেউ বিসিবির নীরব অবস্থানের সমালোচনা করছেন।
নারী ক্রিকেটে এমন অভিযোগকে অনেকে একটি বড় দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখছেন। তারা মনে করছেন, জাহানারার এই প্রকাশ্য অভিযোগ ভবিষ্যতে নারী ক্রীড়াবিদদের নিরাপত্তা ও সম্মানের বিষয়ে নতুন আলোচনার পথ খুলে দেবে।
সবশেষে, জাহানারার বক্তব্যে স্পষ্ট—তিনি শুধু নিজের জন্য নয়, পুরো নারী দলের সম্মান ও নিরাপদ পরিবেশের জন্যই এই বিষয়টি সামনে এনেছেন। এখন নজর বিসিবির দিকে—বোর্ড কীভাবে এই অভিযোগের জবাব দেয়, সেটিই দেখার বিষয়।


































