গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে ঘটেছে এক অবিশ্বাস্য ও রীতিমতো হাস্যকর ঘটনা—নিজের ভাইয়ের সঙ্গে মারামারির ঘোষণা দিতে পুরো গ্রামজুড়ে মাইকিং করেছেন এক ব্যক্তি।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) উপজেলার বৈরীহরিণমারী গ্রামে ঘটে এই অস্বাভাবিক ঘটনাটি, যা মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মৃত আব্দুল হোসেনের ছেলে আব্দুল কুদ্দুস মিয়া দুপুরে রিকশা নিয়ে গ্রামে ঘুরে ঘুরে মাইক বাজিয়ে ঘোষণা দেন—“আগামীকাল জুমার নামাজের পর আমি আমার ভাই হাবিজারের সঙ্গে মারামারি করব, সবাই জানেন রাখেন।” তার এই ঘোষণায় মুহূর্তেই চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় গোটা এলাকায়।
গ্রামবাসীরা এমন ঘোষণায় হতবাক হয়ে যান। কেউ কেউ বিষয়টিকে অবিশ্বাস্য মনে করলেও, পরে নিশ্চিত হন ঘটনাটি সত্যি। স্থানীয়রা জানান, দুই ভাইয়ের মধ্যে পানের বরজের জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধ চলে আসছিল। সেই বিরোধের জের ধরেই আব্দুল কুদ্দুস সিদ্ধান্ত নেন ছোট ভাই হাবিজারের সঙ্গে প্রকাশ্যে ‘মুখোমুখি’ লড়াই করার, এবং সেই ঘোষণাই দিতে মাইকিং করেন তিনি।
ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটি অনেকের কাছে রসিকতা ও বিস্ময়ের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়, আবার অনেকে এমন আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর স্থানীয় প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নেয়। পলাশবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জুলফিকার আলী ভুট্টো জানান, “ঘটনার পর আমরা বড় ভাই আব্দুল কুদ্দুস মিয়াকে থানায় ডেকে পাঠাই। সেখানে দুই ভাইয়ের মধ্যে সমঝোতা করানো হয়। কুদ্দুস মিয়া নিজের ভুল স্বীকার করেছেন এবং বলেছেন, মাইকিং করে এমন ঘোষণা দেওয়া তার উচিত হয়নি।”
স্থানীয়দের ভাষ্য, দুই ভাইয়ের জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব বহুদিনের পুরোনো। তবে এই বিরোধ যেভাবে প্রকাশ পেয়েছে, তাতে গোটা গ্রামেই হাস্যরস ও বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়েছে। কেউ কেউ বিষয়টিকে ‘গ্রামের ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা’ বলে উল্লেখ করেছেন।
সব মিলিয়ে, এক ভাইয়ের সঙ্গে অন্য ভাইয়ের ঝগড়ার ঘোষণা মাইকিং করে প্রচার করার এই ঘটনাটি এখন পুরো এলাকায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।

































