বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের চলমান বিতর্কে এবার সাবেক অধিনায়ক রুমানা আহমেদ নতুন মাত্রা যোগ করেছেন।
রুমানা স্পষ্টভাবে দাবি করেছেন, দীর্ঘদিন ধরে দলের ভেতরে খেলোয়াড়দের অস্বস্তিকর আচরণ, টাচ-সম্পর্কিত সমস্যার পাশাপাশি অপমানজনক পরিবেশ এবং সিনিয়রদের প্রতি অশ্রদ্ধার সংস্কৃতি তৈরি হয়েছিল। তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এসব বিষয়ে সঠিক পদক্ষেপ নেননি বলেও তিনি উল্লেখ করেছেন।
রুমানা বলেন, “মঞ্জু ভাই টাচ করে কথা বলা পছন্দ করতেন। কখনো শোল্ডার ধরতেন, পেছন থেকে এসে দুই হাতে ধরতেন। কোনটা গুড টাচ, কোনটা ব্যাড টাচ—এটা মেয়েদের বোঝার ক্ষমতা অবশ্যই আছে।” তিনি আরও জানান, দলের ভেতরে দীর্ঘদিন ধরে একধরনের ‘ভয়’ কাজ করত। শুধু খেলোয়াড়রাই নয়, অনেক কর্মকর্তা পর্যন্ত মঞ্জুরুল ইসলামের আচরণে অস্বস্তিতে ছিলেন। “তিনি এমন আচরণ করতেন যেন আমরা গরু-ছাগল। মাঠের বাইরে বা ভেতরে সব জায়গায় ভয় কাজ করত,” রুমানা বলেন।
জাহানারা আলমের সাম্প্রতিক কান্নাজড়ানো সাক্ষাৎকারের প্রসঙ্গ টেনে রুমানা বলেন, তা দেখে খুব খারাপ লেগেছে এবং তিনি নিজেও গিল্টি ফিল করেছেন। তিনি জানান, ২০২৩ সাল থেকে সতর্ক করে আসছিলেন যে, দলের মধ্যে কিছু ঘটতে চলেছে এবং তা সত্যিই ঘটছে। জিম্বাবুয়ে সফরে বড় ধরনের বিরোধের পর জাহানারা বিসিবিতে ছয় পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু রুমানা দাবি করেন, সেই অভিযোগপত্র উল্টো তার বিরুদ্ধেই ব্যবহার করা হয়।
তিনি বলেন, বিষয়গুলো বিসিবিকে একাধিকবার জানানো হয়েছিল, এমনকি সিইওর কাছে পর্যন্ত। কিন্তু সঠিক তদন্ত হয়নি। মিডিয়া জানত, দেশের সবাই জানত, কিন্তু বিসিবি যেন জানত না এমন কিছু হওয়া সম্ভব নয়।
রুমানা নিজের ক্যারিয়ারের শেষ দিকেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “মঞ্জু ভাই বলেছিলেন আমার পারফরম্যান্স ঠিক আছে, কিন্তু অজুহাত হিসেবে ফিটনেস দেখানো হলো। একজন পারফর্মার কীভাবে আনফিট হয়? আমাকে ইচ্ছাকৃতভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে।” এছাড়া, টানা চার বছর অধিনায়ক থাকলেও বিদায়ের সময় কোনো মূল্যায়ন পাননি তিনি।
শেষে রুমানা আহ্বান জানিয়েছেন, “জাহানারা বলেছে, আমি বলেছি এগুলো শোনার সময় এসেছে। সিনিয়ররা না বললে জুনিয়ররা চিরদিন চুপ থাকবে। এখন শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বও দেখছে। বোর্ড যদি আগেই ব্যবস্থা নিত, আজ এতদূর যেত না।”
বাংলাদেশ নারী ক্রিকেটে এই ধরনের অভিযোগের পর বিসিবি নতুন করে তদন্তে নামবে কি না, তা সময়ই দেখাবে। তবে রুমানা ও জাহানারার বক্তব্য ইতিমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

































