জবি ছাত্রদল নেতা হাসিবুরের প্রথম জানাজা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে

Published : ১০:৪২, ৪ অক্টোবর ২০২৫
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক হাসিবুর রহমানের প্রথম জানাজা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার রাত পৌনে ১টার দিকে শহীদ মিনারের সামনে এ জানাজা সম্পন্ন হয়। হাসিবুরের গ্রামের বাড়ি ভোলা জেলায়।
জানাজায় কেন্দ্রীয় ছাত্রদল, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, ডাকসু ও জবি ছাত্রদলের সাবেক নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা অংশ নেন। পরে তার মরদেহ নিজ জেলা ভোলায় নেওয়া হয়। সেখানে দ্বিতীয় জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে।
হাসিবুরের সহপাঠী ড্যানি বলেন, “আমার বন্ধু পবিত্র জুমার দিনে মারা গেছে। আল্লাহ যেন তাকে জান্নাতুল ফেরদৌসে স্থান দেন।”
ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম বলেন, “হাসিবের সবচেয়ে বড় পরিচয় হলো, সে জুলাই যোদ্ধা। আমরা তার অবদানকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি।”
কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আমানুল্লাহ আমান বলেন, “আমাদের সবসময় ভালো মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। মরহুমের জন্য আমরা সবাই দোয়া করবো।”
কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন, “হাসিব আমাদের ছাত্রদল পরিবারের সবার প্রিয় ছিল। তার মৃত্যু মেনে নেওয়া খুবই কষ্টকর। সে শহীদ হয়েছে, এটা বিশ্বাস করতেও কঠিন লাগছে।
জুলাই আন্দোলনে মিরপুরে সে সক্রিয় ছিল। জবি ক্যাম্পাসে আন্দোলন করলে পুলিশ ধরতো, তাই আমরা বাইরে আন্দোলন করতাম। হাসিবের বড় ভাই সবার আগে গণভবন দখলে গিয়েছিলেন। আমরা তাকে জকসুর জন্য ভেবেছিলাম, কিন্তু সে আমাদের ছেড়ে চলে গেল।” এসময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, “আমাদের আদর্শ ভিন্ন হলেও মুসলমান হিসেবে মৃত্যুর ঘটনায় সমবেদনা জানানো দায়িত্ব। হাসিবের মৃত্যুতে সর্বস্তরের মানুষের প্রতিক্রিয়া প্রমাণ করেছে, সে ছিল একজন ভালো ও মিশুক মানুষ।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মোহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, “আজ আমরা গভীর শোকাহত। এ ধরনের মৃত্যু জবি পরিবারের জন্য মেনে নেওয়া কঠিন।
ক্যাম্পাসে সব দলকে নিয়ে আমরা যে বাগান সাজিয়েছিলাম, তার একটি ফুল আজ ঝরে পড়লো। তার কোনো আর্থিক লেনদেন থাকলে আমি নিজেই তা পরিশোধ করবো। আল্লাহ তার পরিবারকে এ শোক সইবার শক্তি দিন।”
এ ছাড়া জানাজায় অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, শাখা ইসলামী ছাত্রশিবির ও ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা।
উল্লেখ্য, হাসিবুর রহমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬–১৭ শিক্ষাবর্ষের (১২তম ব্যাচ) ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন।
এর আগে শুক্রবার রাত ১০টার দিকে রাজধানীর ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাতে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল ও সদস্যসচিব শামসুল আরেফীনের সঙ্গে ক্যাম্পাসসংলগ্ন হোটেল স্টার কাবাবে খাওয়ার সময় হঠাৎ খিঁচুনি ওঠে ও বুকে ব্যথা অনুভব করেন তিনি।
দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসকের প্রাথমিক ধারণা, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে।
বিডি/এএন