ভোলায় জামায়াত নেতাকর্মীদের ওপর বিএনপির হামলার অভিযোগ, দোকান ভাঙচুরসহ আহত অন্তত ১২
Published : ০০:২১, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫
ভোলায় জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের ওপর ধারাবাহিক হামলার অভিযোগ উঠেছে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। দৌলতখান উপজেলার ঘটনার পর এবার ভোলা সদর উপজেলায় হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছে জামায়াত।
এতে ইউনিয়ন আমির ও সেক্রেটারিসহ অন্তত ১০ থেকে ১২ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। পাশাপাশি জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলন সমর্থিত চারটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে ভোলা সদর উপজেলার ভেলুমিয়া ইউনিয়নের বাজার এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর রাতে জামায়াতে ইসলামী ভোলা সদর উপজেলা শাখার উদ্যোগে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরা হয়।
ঘটনার সূত্রপাত ফেসবুক বিতর্ক থেকে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মহান বিজয় দিবসের সকালে বিএনপি সমর্থক রিয়াজ ও জামায়াত কর্মী মো. বসারের মধ্যে ফেসবুকে লেখালেখিকে কেন্দ্র করে প্রথমে বাকবিতণ্ডা হয়, যা পরে হাতাহাতিতে রূপ নেয়। পরে স্থানীয় জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনের নেতারা দুজনকে আলাদা করে পরিস্থিতি শান্ত করেন। এশার নামাজের পর বিষয়টি মীমাংসার আশ্বাসও দেওয়া হয়।
কিন্তু রাতে জামায়াতের কয়েকজন নেতাকর্মী ভেলুমিয়া বাজারে একটি দোকানে চা পান করার সময় ভেলুমিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. ইউনুস কমান্ডার ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাই কুট্টির নেতৃত্বে শতাধিক নেতাকর্মী মিছিল নিয়ে এসে তাদের ওপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ করা হয়।
দোকান ভাঙচুর ও আতঙ্ক হামলায় জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনের অন্তত ১০ জন নেতাকর্মী আহত হন। একই সঙ্গে জামায়াত সমর্থক মমিনের জুতার দোকান, আক্কাসের কাপড়ের দোকান, জাকিরের কাপড়ের দোকান এবং ইসলামী আন্দোলন সমর্থক আনোয়ার কাজীর কাপড়ের দোকানে ভাঙচুর চালানো হয়। এতে পুরো বাজার এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে যৌথ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
জামায়াতের অভিযোগ সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামী ভোলা সদর উপজেলা আমির মাওলানা কামাল হোসেন বলেন,
“মহান বিজয় দিবসের মিছিলকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতাকর্মীরা পরিকল্পিতভাবে দুই দফা আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। সন্ধ্যার পর ভেলুমিয়া বাজারে অতর্কিত হামলায় আমাদের অন্তত ১০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন এবং ৪ থেকে ৫টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর করা হয়েছে। হামলার সময় ‘রাজাকার’ স্লোগান দেওয়া হয়।”
বিএনপির পাল্টা দাবি অন্যদিকে ভোলা সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মো. হেলাল উদ্দিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,
“ভেলুমিয়া বাজারে বিএনপির একটি মিছিলের পেছন দিক থেকে জামায়াত নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। এতে রিয়াজ ও মিলন নামে আমাদের দুই কর্মী আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় জামায়াত এসব ঘটনা ঘটিয়ে তার দায় বিএনপির ওপর চাপিয়ে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে।”
পুলিশের বক্তব্য ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন,
“তুচ্ছ একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পূর্বের হামলার প্রসঙ্গ উল্লেখ্য, একই দিন সকালে দৌলতখান উপজেলা স্টেডিয়ামে মহান বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে অতিথিদের জন্য নির্ধারিত চেয়ারে বসাকে কেন্দ্র করে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে বিএনপি ও যুবদলের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় জামায়াতের অন্তত ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হন বলে দাবি করা হয়। তবে দৌলতখান উপজেলা বিএনপি ও যুবদল সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
আরএইচ/ ঢাকা
































