নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মার পদত্যাগের পর দেশটিতে নতুন নেতৃত্ব নিয়ে ইতোমধ্যেই জোর আলোচনা শুরু হয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে এমন আলোচনায় কাঠমান্ডুর মেয়র বালেন্দ্র শাহকে (বালেন) প্রধানমন্ত্রী করার প্রচারণা দেখা যাচ্ছে।
দ্য কাঠমান্ডু পোস্টের একটি সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, ‘বালেন্দ্র শাহর নেতৃত্বে নতুন নেপালের রূপরেখা’। এতে তারা লিখেছে, যারা দীর্ঘদিন ধরে ব্যক্তিগত স্বার্থে দেশ পরিচালনা করেছে এবং নাগরিকদের চাকরের মতো বিবেচনা করেছে, সেই পুরনো প্রজন্মের বিদায়ের সময় এসেছে। ইতিহাস প্রমাণ করেছে, প্রতিটি সংকটের সময়ে নতুন প্রজন্মই পরিবর্তনের নেতৃত্ব দেয়। আজও গণতান্ত্রিক নিয়মের সঙ্গে জনগণের মধ্য থেকে নতুন নেতৃত্ব উদ্ভূত হচ্ছে।
সম্পাদকীয়তে আরও বলা হয়েছে, কেপি শর্মা অলি, শের বাহাদুর দেউবা ও পুষ্পকমল দাহালদের মতো পুরনো নেতারা নতুন নেপালের অংশীদার নন। তারা জনগণের শোষক হিসেবে ইতিহাসে স্মরণীয় থাকবেন। তাদের অপরাধ শুধু দেশের সম্পদ লুটে নেওয়ায় সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং দুর্নীতিবিরোধী শান্তিপ্রিয় তরুণদের ওপর গুলি চালানোও অন্তর্ভুক্ত।
কাঠমান্ডু পোস্ট উল্লেখ করেছে, প্রতিটি আন্দোলনের একটি লক্ষ্য ও গন্তব্য থাকে। জনগণের আশা ও আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দেশকে নতুন পথে পরিচালনা করতে অবিলম্বে নতুন পরিকল্পনা এবং নেতৃত্ব প্রয়োজন। তরুণদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ এবং নেপালি সমাজের অঙ্গীকারকে সম্মান জানাতে হলে নতুন নেতৃত্বের অধীনে পরিবর্তন আনা জরুরি।
আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারীরা স্পষ্টভাবে বালেন্দ্র শাহকে সংকট উত্তরণের আহ্বান জানিয়েছেন। ইতিহাসের দৃষ্টিকোণে, ১৯৯০ ও ২০০৬ সালের আন্দোলনগুলোতে তৎকালীন আন্দোলনকারীরাই নতুন নেতৃত্ব বেছে নিয়েছিল। এখনকার আন্দোলনকারীদেরও নতুন নেতৃত্ব বেছে নেওয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করে নির্বাচনের পথে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া জরুরি।
এনডিটিভি জানিয়েছে, এক সময় র্যাপার ছিলেন বালেন্দ্র শাহ, বর্তমানে রাজনৈতিক অঙ্গনে পরিচিত ‘বালেন’ নামে। সম্প্রতি তরুণ আন্দোলনে তিনি সমর্থন জুগিয়েছেন এবং কেপি শর্মার পদত্যাগের পর অনেকেই তাকে নেপালের নেতৃত্ব নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। সামাজিক মাধ্যমে ‘বালেন দাই, টেক দ্য লিড’ হ্যাশট্যাগে এই আহ্বান ছড়িয়ে পড়েছে।
প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগের পর ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে বালেন্দ্র শাহ তরুণদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন, প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন, তাই এখন তরুণদের শান্ত থাকতে হবে, প্রাণহানি এড়াতে হবে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষা করতে হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, নেপালের নেতৃত্ব আগামী দিনে তরুণদের হাতে যাবে।