আবারও এশিয়ায় জেন-জিদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ আন্দোলন

Published : ১৪:১৯, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
মন্ত্রী-এমপিদের জন্য বিলাসবহুল গাড়ি কেনার সরকারি সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে এবার তীব্র বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে এশিয়ার আরেক দেশ পূর্ব তিমুর। শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া আর নেপালের মতো এখানেও আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছে তরুণ প্রজন্ম জেন-জি। ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে শেষ পর্যন্ত এমপিদের বিনা মূল্যে গাড়ি দেওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে দেশটির সরকার।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এর আগের দিন মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানী দিলিতে হাজারো তরুণ বিক্ষোভকারী রাস্তায় নামেন। তারা টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন এবং সরকারি একটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। এর কয়েক ঘণ্টা পরই সরকার এমপিদের গাড়ি দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেয়।
তবে এ সিদ্ধান্ত বাতিলের পরও বিক্ষোভ থামেনি। বুধবারও কয়েক হাজার মানুষ রাজধানীর সড়কে নেমে সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ নেন। প্রাথমিকভাবে এমপিদের জন্য গাড়ি কেনার সিদ্ধান্ত ঘিরে শুরু হলেও আন্দোলন এখন রূপ নিয়েছে আরও বিস্তৃত দাবিতে। বিক্ষোভকারীরা এখন সাবেক এমপিদের আজীবন পেনশন সুবিধা বাতিলের দাবিও তুলেছেন।
বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ চলাকালে তিনিও কাঁদানে গ্যাসে আক্রান্ত হন। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “জনগণ অভাব-অনটনে দিন কাটাচ্ছে, অথচ এমপিরা বিলাসবহুল গাড়ি কেনার পেছনে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।”
ইন্টার-পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের ২০২৩ সালের তথ্য অনুযায়ী, পূর্ব তিমুরে একজন এমপির বার্ষিক বেতন ৩৬ হাজার মার্কিন ডলার যা দেশটির গড় আয়ের (প্রায় ৩ হাজার ডলার) চেয়ে প্রায় ১২ গুণ বেশি।
এদিকে এমপিদের জন্য গাড়ি কেনার পরিকল্পনা পূর্ব তিমুরে নতুন কিছু নয়। কয়েক বছর ধরেই এ নিয়ে বিক্ষোভ চলছে। ২০০৮ সালে এমপিদের জন্য ১০ লাখ ডলার ব্যয়ে গাড়ি কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে এর প্রতিবাদে রাস্তায় নামে শিক্ষার্থীরা। তখন বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করেছিল পুলিশ।
বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়া সিজারিও সিজার বলেন, “দেশের মানুষ শিক্ষা, পানি, স্যানিটেশনসহ মৌলিক সেবার ঘাটতিতে ভুগছে। অথচ এমপিরা নিজেদের সুবিধার জন্য আইন বানাচ্ছে। এটি আমরা অন্যায় মনে করি।” তিনি আরও জানান, এমপিদের কাছে এখনও ভালো অবস্থায় সরকারি গাড়ি রয়েছে। তবুও তাদের জন্য নতুন টয়োটা প্রাডো এসইউভি কেনার পরিকল্পনা করেছিল সরকার।
জাতিসংঘের তথ্য বলছে, পূর্ব তিমুরের মোট জনসংখ্যার ৭০ শতাংশেরও বেশি ৩৫ বছরের নিচে। দেশটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দরিদ্রতম রাষ্ট্রগুলোর একটি হলেও তুলনামূলকভাবে গণতান্ত্রিক দেশের উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হয়।
BD/AN