মার্কিন নাগরিককে ঘিরে চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি

মার্কিন নাগরিককে ঘিরে চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১৩:৫১, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা পরিচয় দেওয়া এনায়েত করিম ওরফে মাসুদ করিম চৌধুরীকে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে আনতে গিয়েছিলেন পুলিশের একজন পদস্থ কর্মকর্তা। শুধু তাই নয়, তাকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য পুলিশের ডিআইজি পদমর্যাদার আরেক কর্মকর্তা নিজের দেহরক্ষীকে (যিনি একজন পুলিশ সদস্য) সরাসরি এনায়েত করিমের দায়িত্বে নিয়োজিত করেছিলেন।

পরবর্তীতে যখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এনায়েত করিমকে গ্রেপ্তার করে, তখনও সেই দেহরক্ষী তার সঙ্গেই ছিলেন। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর দেহরক্ষীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট ডিআইজির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, গত ৬ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসেন এনায়েত করিম। ঢাকায় পৌঁছানোর পর তিনি টানা দুদিন রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে অবস্থান করেন। সেই হোটেলের বুকিং থেকে শুরু করে সব ধরনের খরচ বহন করেন জাতীয় পার্টির রওশনপন্থী অংশের মহাসচিব পরিচয় দেওয়া কাজী মামুনুর রশিদ।

গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য নিজেই স্বীকার করেছেন এনায়েত করিম বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

এর আগে গত শনিবার সন্দেহভাজন হিসেবে আটক হওয়ার পর তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে রমনা থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটির তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

গত সোমবার আদালত ওই মামলায় এনায়েত করিমকে ৪৮ ঘণ্টার রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দেন। তার কাছ থেকে জব্দ করা পাসপোর্টে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক বলে উল্লেখ রয়েছে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম জানান, রিমান্ডে এনে এনায়েত করিমকে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার সঙ্গে জড়িত আরও কয়েকজনের নাম জানা গেছে। পর্যাপ্ত প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এনায়েত করিম গত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে নিজেকে একটি প্রভাবশালী দেশের গোয়েন্দা সংস্থার দক্ষিণ এশিয়ার প্রধান পরিচয় দিয়ে প্রতারণা চালিয়ে আসছেন। রাজনৈতিক নেতাদের প্রভাবিত করতে কখনো রাষ্ট্রক্ষমতায় বসানোর স্বপ্ন দেখাতেন, কখনো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেনশিয়াল ডিনারে আমন্ত্রণ পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিতেন।

২০০১ সালের পর থেকে শুরু করে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগেও তিনি বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বহু নেতার কাছ থেকে অর্থ নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

শুধু তাই নয়, ২০১৮ সালের পরেও বিএনপিপন্থী এক সাংবাদিক নেতা এবং নবগঠিত একটি রাজনৈতিক দলের (যার নেতা পরে দলটি ছেড়ে যান) সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে প্রতারণা অব্যাহত রাখেন। এখনো এই দুজনের সঙ্গে তার যোগাযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলেও একবার প্রতারণার অভিযোগে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন এনায়েত করিম।

BD/AN

শেয়ার করুনঃ
Advertisement