১৭ বিয়ের কেলেঙ্কারিতে শেষ পর্যন্ত বরখাস্ত বন কর্মকর্তা

Published : ১৪:৩০, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
যেখানেই বদলি, সেখানেই নতুন বিয়ে এভাবেই ১৭ জন নারীকে একে একে বিয়ে করার অভিযোগে অবশেষে চাকরি হারালেন বরিশালের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. কবির হোসেন পাটোয়ারী।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে রংপুর রেঞ্জে সংযুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বরিশালের ডিএফও-র ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পটুয়াখালী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (উপ-বন সংরক্ষক) ড. মোহাম্মদ জাহিদুর রহমান মিঞাকে।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, নতুন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন। বরিশাল উপকূলীয় অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দে গণমাধ্যমকে বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে বিষয়টি নিয়ে ই-মেইল পেয়েছি।
প্রসঙ্গত, বিদেশে পড়াশোনার সুযোগ, চাকরির প্রলোভন, বিমানবালা বানানো কিংবা সম্পত্তি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেখিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে ১৭ জন নারীকে বিয়ের অভিযোগ উঠেছে মো. কবির হোসেন পাটোয়ারীর বিরুদ্ধে।
এই ঘটনায় ভুক্তভোগী নারীরা ও তাদের স্বজনরা গত ১১ সেপ্টেম্বর বরিশাল নগরীর কাশিপুরে বন সংরক্ষক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন। মানববন্ধনে ঢাকার নাজনিন আক্তার শীলা, নারায়ণগঞ্জের সোনিয়া আক্তার, খুলনার নাসরিন আক্তার দোলনসহ অন্তত ১৭ নারী নিজেদের প্রতারণার শিকার হিসেবে দাবি করেন।
অন্যদিকে, মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ১৭ বিয়ে কাণ্ড নিয়ে বরিশালে একটি মামলা দায়ের করেন পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট হাফিজ আহম্মেদ বাবলু। বরিশাল চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রথম আমলী আদালতে দায়ের হওয়া মামলাটি আমলে নিয়ে বিচারক মো. সাদিক আহম্মেদ পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
বাদী অ্যাডভোকেট হাফিজ আহম্মেদ বাবলু জানান, চাঁদপুরের মতলব উপজেলার বাসিন্দা কবির হোসেন পাটোয়ারী ঢাকা, খুলনা, সিরাজগঞ্জ, বাগেরহাটসহ বিভিন্ন জেলায় কর্মরত থাকাকালে ১৭টি বিয়ে করেছেন। গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে বিষয়টি জানার পর তিনি আইনের প্রতি দায়বদ্ধ হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।
তার অভিযোগ, আসামি মুসলিম ফ্যামিলি আইনের ১৯৬১ সালের ৬ ধারার বিধান ভঙ্গ করেছেন এবং প্রথম বিয়ে গোপন রেখে একে একে ১৭টি বিয়ে করেছেন, যা ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধকে চ্যালেঞ্জ করার মতো গুরুতর অপরাধ।
এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার ফোন করা হলেও বন কর্মকর্তা কবির হোসেন পাটোয়ারীর মোবাইল নম্বর বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
BD/AN