বাংলাদেশ ইতিহাস রচনা করেছে: প্রথমবারের মতো ইউনেস্কো সাধারণ সম্মেলনের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছে। সংস্থার সদস্য হিসেবে ৫৩ বছরের মধ্যে এটি বাংলাদেশের জন্য এক অসাধারণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
মঙ্গলবার প্যারিসে ইউনেস্কোর নির্বাহী বোর্ডের ২২২তম অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রার্থী রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা জাপানের প্রার্থীকে ৩০–২৭ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে সভাপতি নির্বাচিত হন। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় এ তথ্যের মাধ্যমে জানায়।
প্রাথমিকভাবে এই পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিল চারটি দেশ—বাংলাদেশ, জাপান, ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়া। পরবর্তীতে সেপ্টেম্বর মাসে ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়া তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেয়।
রাষ্ট্রদূত তালহা বর্তমানে ইউনেস্কোর স্থায়ী প্রতিনিধি এবং ফ্রান্স, মোনাকো ও কোত দিভোয়ারের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বও পালন করছেন। তিনি আসন্ন ৪৩তম সাধারণ সম্মেলনে উজবেকিস্তানের সামারকান্দে রোমানিয়ার রাষ্ট্রদূত সিমোনা মিরেলা মিকুলেস্কুর স্থলাভিষিক্ত হবেন।
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস, শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার এবং সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বাংলাদেশের এই ঐতিহাসিক অর্জনের জন্য ইউনেস্কোর নির্বাহী বোর্ডকে ধন্যবাদ জানান। মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “এটি বাংলাদেশের জন্য এক গর্বের মুহূর্ত। শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে আমাদের স্থায়ী মিশন ও উপদেষ্টাদের নেতৃত্বের জন্য আমি কৃতজ্ঞ।”
শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার বলেন, “ইউনেস্কোর সর্বোচ্চ পদে বাংলাদেশের এই নির্বাচন শিল্প, সংস্কৃতি এবং শিক্ষায় বৈশ্বিক মনোযোগ আনবে। এটি এক বিরল সম্মান।” সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী জানান, “বাংলাদেশের সক্রিয় অংশগ্রহণ ইতিমধ্যেই প্রশংসিত হয়েছে। এই নতুন পদ আমাদের শিল্প, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরার শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম দেবে।”
রাষ্ট্রদূত তালহা ২০২১ সালে ইউনেস্কোতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি নির্বাহী বোর্ডের সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং বলেন, “এটি দেশের জন্য এক ঐতিহাসিক অর্জন।” পাশাপাশি তিনি অঙ্গীকার করেন যে, বিশ্বে বহুপাক্ষিক সহযোগিতার এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তিনি ইউনেস্কোর ম্যান্ডেট রক্ষায় অক্লান্ত পরিশ্রম করবেন।