হত্যা ও অশান্তি: ইসলাম কী বলে

Published : ০১:৩৯, ২১ অক্টোবর ২০২৫
ইসলাম শব্দের অর্থ শান্তি ও আত্মসমর্পণ। পৃথিবীতে ইসলামের আগমন হলো শান্তি, সাম্য ও মানবতার বার্তা নিয়ে।
ইসলাম ধর্ম মানুষের প্রতি উদারতা, সহমর্মিতা ও মানবিক মূল্যবোধ শেখায়; এটি ধর্ম, বর্ণ, জাতি বা সামাজিক অবস্থান নির্বিশেষে সবার প্রতি সমান দৃষ্টিভঙ্গি প্রদর্শনের শিক্ষা দেয়। ইসলামে সহিংসতা ও সন্ত্রাস সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ।
ইসলামের দৃষ্টিতে সহিংসতা
আল্লাহ তা‘আলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, “যে ব্যক্তি পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করবে, সে সেখানে কোনো ধরনের বিপর্যয় সৃষ্টি করবে না।” (সুরা আরাফ, আয়াত ৫৬)
পবিত্র কোরআনে আরও বলা হয়েছে, “যারা পৃথিবীতে ধ্বংসাত্মক কাজ করে, আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন না।” (সুরা মায়িদা, আয়াত ৬৪)
আল্লাহ আরও বলেন, “যারা আল্লাহর সঙ্গে দেওয়া অঙ্গীকার ভঙ্গ করে, সম্পর্কের অখণ্ডতা নষ্ট করে এবং দুনিয়ায় অশান্তি ছড়ায়, তাদেরই ক্ষতি হয়।” (সুরা বাকারাহ, আয়াত ২৭)
সুরা বাকারাহের অন্য আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে, “যখন তাদেরকে বলা হয়, ‘পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করো না,’ তারা বলে, ‘আমরাই শান্তি স্থাপনকারী।’ সতর্ক হও, প্রকৃতপক্ষে তারা অশান্তি সৃষ্টিকারী, কিন্তু তা তারা বুঝতে পারে না।” (আয়াত ১১-১২)
পবিত্র কোরআনে আরও বলা হয়েছে, “যথাযথ কারণ ছাড়া কেউ কাউকে হত্যা করলে, মনে কর যেন সে দুনিয়ার সকল মানুষকে হত্যা করেছে; আর কেউ কারও জীবন রক্ষা করলে, সে যেন দুনিয়ার সকল মানুষের প্রাণ রক্ষা করেছে।” (সুরা মায়িদা, আয়াত ৩২)
আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহ হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন, তাকে যথাযথ কারণ ছাড়া হত্যা করা যাবে না।” (সুরা বনী ইসরাইল, আয়াত ৩৩)
হাদিস শরিফে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “দুনিয়া ধ্বংস করার চেয়ে বেশি আল্লাহর কাছে ঘৃণ্য কাজ হলো একজন মানুষকে হত্যা করা।” (তিরমিজি, হাদিস ১৩৯৫)
রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, “প্রকৃত মুসলমান হলো সেই ব্যক্তি, যার হাত ও মুখ থেকে অন্য মুসলমান নিরাপদ থাকে।” (বুখারি, হাদিস ৬৪৮৪)
সারসংক্ষেপ
ইসলাম শান্তি, সহমর্মিতা ও ন্যায়ের উপর গুরুত্ব আরোপ করে। ধর্মপ্রাণ মুসলমান হিসেবে অন্যদের জীবন ও সম্মান রক্ষা করা সকলের প্রথমিক কর্তব্য। ইসলামে সহিংসতা, হত্যাকাণ্ড ও অশান্তি সৃষ্টি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। শান্তি ও মানবতার চর্চাই প্রকৃত মুসলিমের পরিচয়।
বিডি/এএন