নতুন চাঁদ দেখার গুরুত্ব

Published : ০১:৪২, ১৮ অক্টোবর ২০২৫
হিজরি ক্যালেন্ডার চাঁদের অবস্থানের ওপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হয়। অর্থাৎ, নতুন চাঁদ দেখা মাত্রই হিজরি ক্যালেন্ডারের একটি নতুন মাসের সূচনা হয়।
ইসলামের বিভিন্ন বিধান এবং ইবাদত পালন করতে হিজরি ক্যালেন্ডারের তারিখ অনুযায়ী কাজ করা হয়। তাই মুসলমানদের জন্য হিজরি ক্যালেন্ডারের হিসাব রাখা, মাসের শুরুতে নতুন চাঁদ দেখা হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা এবং তার খবর রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন:
یَسۡـَٔلُوۡنَكَ عَنِ الۡاَهِلَّۃِ قُلۡ هِیَ مَوَاقِیۡتُ لِلنَّاسِ وَ الۡحَجِّ
অর্থ: “তারা তোমাকে নতুন চাঁদ সম্পর্কে প্রশ্ন করে। বল, তা মানুষের ও হজের জন্য সময় নির্ধারক।” (সুরা বাকারা: ১৮৯)
প্রিয় নবী মুহাম্মাদ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নিজে নিয়মিত চাঁদ দেখতেন এবং অন্য মুসলমানদেরও নতুন চাঁদ দেখতে উৎসাহিত করতেন। সব মুসলমানের জন্য চাঁদ দেখা মুস্তাহাব হলেও, কিছু নির্দিষ্ট ব্যক্তির জন্য চাঁদ দেখা এবং হিজরি ক্যালেন্ডারের হিসাব রাখা ফরজ। প্রত্যেক দেশ বা সমাজে কিছু নির্দিষ্ট মুসলিম যদি হিজরি ক্যালেন্ডারের হিসাব রাখে, তা সবার জন্য যথেষ্ট হবে। যদি কেউ এই দায়িত্ব পালন না করে, তাহলে গুনাহগ্রস্ত হতে হবে।
নবিজি (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নতুন চাঁদ দেখা মাত্র দোয়া পড়তেন। হিজরি মাসের যে কোনো নতুন চাঁদ—মহররম হোক বা অন্য মাসের—দোয়া পড়া নবিজির (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সুন্নত।
তালহা ইবনে উবায়দুল্লাহ (রা.) বর্ণনা করেছেন, নবিজি (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নতুন চাঁদ দেখার সময় দোয়া পড়তেন:
اللَّهُمَّ أَهِلَّهُ عَلَيْنَا بِالْأَمْنِ وَالْإِيمَانِ وَالسَّلَامَةِ وَالْإِسْلَامِ رَبِّي وَرَبُّكَ اللَّهُ
উচ্চারণ: “আল্লাহুম্মা আহিল্লাহূ আলায়না বিল আমনি ওয়াল ঈমানি ওয়াসসালামাতি ওয়াল ইসলামি রাব্বী ওয়া রাব্বুকাল্লাহু”
অর্থ: “হে আল্লাহ! এ নতুন চাঁদ আমাদের জন্য নিরাপত্তা, ঈমান, শান্তি এবং ইসলামের সঙ্গে উদয় কর। (হে চাঁদ!) আমার রব ও তোমার রব এক আল্লাহ।” (সুনানে তিরমিজি: ৩৪৫১)
সুনানে দারেমিতে ইবনে ওমর (রা.) থেকে এই দোয়ার আরেকটি বর্ণনা এসেছে:
اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُمَّ أَهِلَّهُ عَلَيْنَا بِالْأَمْنِ وَالْإِيمَانِ وَالسَّلَامَةِ وَالْإِسْلَامِ وَالتَّوْفِيقِ لِمَا يُحِبُّ رَبُّنَا وَيَرْضَى رَبُّنَا وَرَبُّكَ اللَّهُ
উচ্চারণ: “আল্লাহু আকবার। আল্লাহুম্মা আহিল্লাহু আলাইনা বিল আমনি ওয়াল ঈমান; ওয়াস সালামাতি ওয়াল ইসলাম; ওয়াত তাওফীকি লিমা ইউহিব্বু রাব্বুনা ওয়া ইয়ারজা। রাব্বানা ওয়া রব্বুকাল্লাহ।”
অর্থ: “আল্লাহ মহান। হে আল্লাহ! এ নতুন চাঁদকে আমাদের জন্য নিরাপত্তা, ঈমান, শান্তি ও ইসলামের সঙ্গে উদয় কর। আমাদের তাওফিক দাও যাতে আমরা তা করতে পারি যা আমাদের রব ভালোবাসেন এবং সন্তুষ্ট হন। (হে চাঁদ!) আমাদের ও তোমার রব এক আল্লাহ।” (সুনানে দারেমি: ১৭২৪)
জিলহজ বা হিজরি ক্যালেন্ডারের যে কোনো মাসের নতুন চাঁদ দেখা মাত্র, নবিজির (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ ধরনের দোয়াগুলো পড়া সুন্নত। মুসলমানরা চাইলে এই যে কোনো একটি দোয়া পাঠ করতে পারেন।
বিডি/এএন