পরনারীর সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুললেন আবু ত্বহা আদনান

পরনারীর সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুললেন আবু ত্বহা আদনান ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১৮:২৬, ১৪ অক্টোবর ২০২৫

ইসলামী বক্তা আবু ত্বহা মোহাম্মদ আদনান আবারও আলোচনার কেন্দ্রে। সাম্প্রতিক সময়ে তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে চলছে তুমুল বিতর্ক ও সমালোচনা। এরই মধ্যে নিজের স্ত্রীর করা অভিযোগের জবাবে তিনি প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন।

এক দীর্ঘ ফেসবুক পোস্টে ত্বহা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন— কোনো পরনারীর সঙ্গে তার কোনো হারাম বা অনৈতিক সম্পর্ক নেই।

সোমবার (১৩ অক্টোবর) প্রকাশিত পোস্টে আবু ত্বহা লিখেছেন,

“আরশের মালিকের কসম! আমাকে গুছিয়ে একের পর এক মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হয়েছে! কাবার রবের শপথ! আমি যিনাকার নই! মুহাম্মদের রবের কসম! আমি ব্যভিচারী নই! যার হাতে আমার প্রাণ, তার কসম! তারা আমাকে যত অপবাদ দিয়েছে, তা থেকে আমি সম্পূর্ণ মুক্ত! কোনো পরনারীর সঙ্গে আমার কোনো প্রকার হারাম সম্পর্ক নেই।”

পোস্টের শুরুতেই তিনি বলেন,

“স্বামী-স্ত্রী একে অপরের জন্য ভালোবাসার পবিত্র পোশাক। পোশাকের কাজই হলো সতর ঢেকে রাখা, যদিও তা ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায়! আমি আজীবন সেই দায়িত্ব পালন করেছি, এখনো করছি।”

ত্বহা আরও লিখেছেন,

“কারণ আজও আমি তার স্বামী। আর যদি আগামীকাল আমি সেই পোশাক না থাকি, তবুও আমি সেই দেহ সম্পর্কে কোনো অপমানজনক মন্তব্য করব না, যার জিম্মাদার আমি নই। আমার দ্বিন আমাকে সেটাই শিখিয়েছে।”

তিনি বলেন,

“আল্লাহর কসম! আমি চাইলে তাদের প্রতিটি মিথ্যাচারের লাইন ধরে ধরে জবাব দিতে পারি, প্রমাণসহ বিগত বছরগুলোর জুলুম প্রকাশ করতে পারি। কিন্তু আমি তা করিনি, আর করবও না। কারণ এতে কোনো কল্যাণ নেই। সমাজে ইউসুফের ভাইদের চোখের পানির দামটাই বেশি! আমি সেই জবাব চাই, যা একমাত্র আল্লাহ আল-জাব্বার দিতে পারেন। ক্ষমা করা বা শাস্তি দেওয়া—দুটিই তাঁর এখতিয়ার।”

ত্বহা স্বীকার করেন,

“ভুল সত্তায় অন্ধ ভালোবাসাই ছিল আমার বড় দোষ। আমি ইনসাফ, ক্ষমা আর সবরের পথেই থেকেছি। কিন্তু তার বিনিময়ে পেয়েছি অপবাদ আর কষ্ট। হয়তো এটাই আমার নিয়তি, তাকদিরের ফয়সালা।”

স্ত্রী সাবিকুন্নাহারের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন,

“যদি কেউ মনে করে আমি চরিত্রহীন, তবে সে আমার মতো অপবিত্র মানুষের সঙ্গে কেন সম্পর্ক রাখবে? কোন স্বার্থে?”

একই সঙ্গে তিনি সতর্ক করে বলেন,

“কাউকে জিনার অপবাদ দেওয়া বড় গুনাহ। এতে ৮০ বেত্রাঘাতের শাস্তি নির্ধারিত। হুজ্জাত ছাড়া কারও উপর এ ধরনের অভিযোগ দিলে আল্লাহর আদালতে জবাব দিতে হবে—এটা ভুলে যেও না।”

ত্বহা জানান, তিনি এখন বরেণ্য ওলামায়ে কেরামের পরামর্শে শরিয়াসম্মত ও আইনি প্রক্রিয়ায় বিষয়টির সমাধানের পথে হাঁটছেন।

“যারা ছেড়ে গেছেন, তারা যেতে পারেন। যারা পাশে আছেন, দোয়া করবেন—যদি ভবিষ্যতে আরও কোনো মিথ্যা অভিযোগ বা হয়রানির মুখে পড়ি, অন্তত আপনারা যেন আমাকে দোয়ার দলে রাখেন।”

তার পোস্টের শেষ অংশে তিনি লিখেছেন,

“আমি নবী ইউসুফ নই, মা আয়েশাও নই। কিন্তু তারা আমাকে যিনা ও ব্যভিচারের যে তহমত দিয়েছে, তার সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। অনুগ্রহ করে আমার পরিবারকে জড়িয়ে কেউ নিজের গুনাহ বাড়াবেন না। আমার দুটি সন্তান আছে—আমার হুরপরি আইশা আর কলিজার টুকরা উসমান। দোয়া করবেন, যেন তারা বাবার স্নেহ থেকে বঞ্চিত না হয়।”

শেষে তিনি বলেন,

“এ বিষয়ে আমার আর কিছু বলার নেই। আমি আমার সাধ্যের শেষটুকু করেছি। হয়তো কিছু বিচ্ছেদেই শান্তি থাকে, আর কষ্টের পরেই স্বস্তি আসে। আল্লাহ পাক যেন জালেম ও মজলুমের মধ্যে উত্তম ফয়সালা করে দেন। আমিন।”

এই পোস্ট প্রকাশের পর থেকেই সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া ও বিতর্কের ঝড় উঠেছে। অনেকে ত্বহার প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করছেন, কেউ আবার তার বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement