লক্ষ্মীপুরে অমৌসুমে মাচায় তরমুজ চাষে সাফল্য, লাভের মুখে কৃষক মোহন

লক্ষ্মীপুরে অমৌসুমে মাচায় তরমুজ চাষে সাফল্য, লাভের মুখে কৃষক মোহন

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:

Published : ১৮:৩১, ৮ আগস্ট ২০২৫

লক্ষ্মীপুরে প্রথমবারের মতো অমৌসুমে মাচায় তরমুজ চাষ করে সাফল্য অর্জন করেছেন সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের চরমনসা গ্রামের কৃষক মোঃ মোহন আলী। পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)-এর আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতা এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সোপিরেট কর্তৃক বাস্তবায়িত কৃষি ইউনিট (ফসলখাত)-এর উদ্যোগে তিনি এ চাষ শুরু করেন। কৃষি ইউনিটের কৃষিবিদ মোঃ রাব্বি আহসান হাসিবের পরামর্শে মোহন আলী অমৌসুমে মাচায় দুই ধরনের তরমুজ চাষ করেন—একটির বাইরের অংশ কালো, ভেতরে লাল; অন্যটির বাইরের অংশ সবুজ, ভেতরে হলুদ। খেতে দেখা যায় সবুজ কচি লতার মাঝে ঝুলছে বড়-ছোট অসংখ্য তরমুজ, যেগুলোতে রঙের বৈচিত্র্য ফুটে উঠেছে।

তরমুজ চাষে কৃষি ইউনিটের পক্ষ থেকে বীজ, মালচিং পেপার, জৈব সার, ফেরোমন ফাঁদ এবং চাষাবাদের জন্য নগদ অর্থ দেওয়া হয়। মালচিং পদ্ধতিতে চাষ করায় আগাছা দমন ও মাটির আর্দ্রতা বজায় রাখা সম্ভব হয়েছে। পোকা দমনে ব্যবহার করা হয়েছে হলুদ ও ফেরোমন ফাঁদ, ফলে কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়নি। বর্তমানে ক্ষেতে প্রায় ৪০০–৫০০টি তরমুজ ঝুলছে, যেগুলো কিছু দিনের মধ্যে বাজারজাতের উপযোগী হবে। বাজারে সবুজ ও কালো রঙের তরমুজের প্রতি কেজির দাম ৭০ থেকে ১০০ টাকা। সে হিসেবে এ মৌসুমে ৭০–৮০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে। তার চাষাবাদে খরচ হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার টাকা, ফলে আনুমানিক ৪০–৫০ হাজার টাকা লাভের আশা করছেন মোহন আলী।

তিনি জানান, প্রথমবারের মতো তরমুজ চাষ করে এত ভালো ফলন দেখে তিনি উচ্ছ্বসিত। আগামী মৌসুমে তিনি আরও এক বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করছেন। মোহন আলীর সাফল্য দেখে এ বছর গ্রামের আরও তিনজন কৃষক নিজস্ব অর্থায়নে একই পদ্ধতিতে তরমুজ চাষে আগ্রহী হয়েছেন। তারা সোপিরেট থেকে কেবল কারিগরি পরামর্শ চাইছেন। সোপিরেটের উপ-সমন্বয়কারী ও কৃষি ইউনিটের ফোকাল পারসন মোঃ শরীফ হোসেন বলেন, মোটিভেশনের মাধ্যমে কৃষক মোহন আলীকে অমৌসুমে মাচায় তরমুজ চাষে উদ্বুদ্ধ করা হয়। আমরা তাকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়েছি। তার সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে এলাকায় অমৌসুমে তরমুজ চাষের আগ্রহ বাড়ছে।

লক্ষ্মীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার মোহাম্মদ মঞ্জুর হোসেন বলেন, আগে লক্ষ্মীপুরে অমৌসুমে তরমুজ চাষের প্রচলন ছিল না। মোহন আলীর জমিতে চাষকৃত সবুজ ও কালো তরমুজের ফলন দেখে প্রমাণ হয়েছে, এই অঞ্চলের মাটি এই জাতের তরমুজ চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। এ তরমুজ সুস্বাদু ও রসালো হওয়ায় বাজারে ভালো চাহিদা তৈরি হবে।

BD/S

শেয়ার করুনঃ
Advertisement