গঙ্গাচড়ায় কৃষিতে আমূল পরিবর্তন, উৎফুল্ল কৃষক

গঙ্গাচড়ায় কৃষিতে আমূল পরিবর্তন, উৎফুল্ল কৃষক ছবি: সংগৃহীত

রংপুর প্রতিনিধি

Published : ১৯:৪২, ২ ডিসেম্বর ২০২৫

রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলা কৃষি অফিসার শাহিনুর রহমানের কৃষক বান্ধব মনোভাবে কৃষিতে আমূল পরিবর্তন হয়েছে। মাঠে মাঠে ঘুরে কৃষকের আস্থা অর্জন করেছেন তিনি। প্রয়োজনের সময় কৃষি কর্মকর্তাকে পাশে পেয়ে অনেক খুশি এলাকার কৃষক।

কৃষকের বন্ধু উপজেলা কৃষি অফিসার শাহিনুর রহমান ২০২৪ সালের ২৮ মার্চ দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে গঙ্গাচড়া উপজেলার কৃষি ব্যবস্থাপনায় যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে তার মাঠপর্যায়ে নিরলস পরিশ্রমে। চলতি মৌসুমে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৯ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমি। অর্জিত হয়েছে ১৯ হাজার ৩৫৫ হেক্টর। চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫ হেক্টর বেশি আমন ধান চাষ হয়েছে।

সবজি ও অন্যান্য ফসলেও লক্ষ্যমাত্রার বেশি চাষ হয়েছে, যা কৃষি বিভাগের উল্লেখযোগ্য সাফল্য। গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ উৎপাদন, মাশরুম চাষ সম্প্রসারণ ও উদ্যোক্তা তৈরির জন্য স্থানীয়ভাবে লাগ সই প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও তা মাঠে ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে উপজেলা পর্যায়ে প্রশংসা অর্জন করেছে।

সারের মূল্যবৃদ্ধি, মজুত রাখা বা কৃত্রিম সংকট তৈরির অভিযোগে উপজেলা প্রশাসন, ভোক্তা অধিকার ও কৃষি বিভাগের যৌথ অভিযানে গত কয়েক মাসে ৪ লক্ষ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়াও কৃষকের সুবিধার্থে ৪ জন ডিলারের পয়েন্ট পরিবর্তন করা হয়েছে। যাতে কৃষক ইউনিয়ন পর্যায়ে হয়রানি ছাড়াই সার সংগ্রহ করতে পারে।

প্রতিদিন মাঠে ঘুরে ফসলের রোগবালাই, সার ব্যবস্থাপনা, বীজ বপনের আধুনিক কৌশল, চরাঞ্চলে নতুন ফসল, বীজ ও কীটনাশকের দোকান তদারকি, প্রণোদনার কৃষক যাচাই, তামাকের পরিবর্তে সবজি চাষ, বন্যা ও খরায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জরুরি সহায়তা ক্ষেত্রে উপজেলা কৃষি অফিসার শাহিনুর রহমানের মাঠঘনিষ্ঠ ও বিশ্বাসযোগ্য ভূমিকায় কৃষকদের মাঝে আস্থা সৃষ্টি হয়েছে। ইউনিয়নভিত্তিক কৃষকদের উপস্থিতিতে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে।

উপ সহকারি কৃষি কর্মকর্তাগণ কৃষকের তথ্য যাচাই করে তালিকা তৈরি করায় অনিয়মের সুযোগ কম। ইফনাপ প্রকল্পের আওতায় কয়েকজন উদ্যোক্তাকে প্রশিক্ষণ দিয়ে জৈব সার উৎপাদনে দক্ষ উদ্যোক্তা তৈরি করা হয়েছে। তাদের উৎপাদিত সার কৃষকগণ ব্যবহার করছে। চরাঞ্চলে তামাকের জায়গা এখন দখল করেছে স্যান্ডবার পদ্ধতির মিষ্টি কুমড়া, মালচিং পদ্ধতির সবজি, মরিচ, হলুদ, ডাল ও মসলাসহ বিভিন্ন ফসল।

ফলে কৃষকদের ফসলের ফলন বেড়েছে। উপজেলার বড়বিল ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল কাদের বলেন, আগে সারের জন্য কৃষকেরা ভোগান্তিতে পড়ত, এখন আর ভোগান্তিতে পড়তে হয় না। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহিনুর রহমান প্রতিনিয়ত মাঠ পরিদর্শন করে আসছে।

কালকোন্দ ইউনিয়নের কৃষক রাসেল মিয়া বলেন, প্রণোদনায় যে স্বচ্ছতা এসেছে তার কৃতিত্ব শাহিনুর রহমানের। নোহালী ইউনিয়নের কৃষক বেলাল উদ্দিন বলেন, তামাক চাষ কমেছে আর সবজির চাষ বেড়েছে। লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের কৃষক রফিকুল হক বলেন, ফসস আক্রান্ত হলে ফোন দিলে শাহিনুর রহমান চলে আসেন।

গজঘন্টা ইউনিয়নের কৃষক আহাদ মিয়া বলেন, চলতি বছর সবজির উৎপাদন দ্বিগুণ হয়েছে। আমনে প্রণোদনা পাওয়া কৃষক মোতাহার হোসেন বলেন, প্রণোদনা পেয়ে উপকার হয়েছে। সময়মতো সার ও বীজ পাওয়ায় ফলন ভালো হয়েছে। গঙ্গাচড়ার নবনীদাস গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, আমন প্রনোদনাসহ ডিলারের কাছ থেকে  সার ও বীজ  সঠিকভাবে পাওয়া যাচ্ছে।

উপজেলা কৃষি অফিসার শাহিনুর রহমান বলেন, গঙ্গাচড়া উপজেলার কৃষকের পাশে থেকে সহায়তা ও পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। উপজেলার ১৪টি ব্লক চরাঞ্চল প্রকল্পের আওতাভুক্ত ১১ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে ফসলের বৈচিত্র্য এসেছে।

পাশাপাশি সার, বীজ ও কীটনাশকসহ অন্যান্য কৃষি উপকরণ কৃষকরা ন্যায্য মূল্যে এবং কৃষকদের কাছে পৌঁছানোর জন্য কাজ করা হচ্ছে। উপজেলা কৃষি অফিসার শাহিনুর রহমানের নেতৃত্বে সুশৃঙ্খল, আধুনিক ও কৃষকবান্ধব কৃষি সেবা ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। 

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement