সাজিদেরও ১১ বছর আগের সেই ছোট্ট জিহাদের মতই করুণ পরিণতি হলো

সাজিদেরও ১১ বছর আগের সেই ছোট্ট জিহাদের মতই করুণ পরিণতি হলো ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১১:৫৫, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫

২০১৪ সালে ঢাকার শাহজাহানপুরে চার বছরের শিশু জিহাদের করুণ মৃত্যুর ঘটনা অনেকেরই মনে আছে—২৩ ঘণ্টার উদ্ধারচেষ্টা, ফায়ার সার্ভিসের হাল ছেড়ে দেওয়া, আর স্থানীয়দের উদ্যোগে শেষ মুহূর্তে শিশুটিকে তুলেও তাকে বাঁচানো না যাওয়ার বেদনাদায়ক স্মৃতি এখনো তাজা।

ঠিক এক যুগ পরে আবারও প্রায় একইভাবে ঘটল আরেকটি হৃদয়বিদারক দুর্ঘটনা—এবার রাজশাহীর তানোরে দুই বছরের শিশু সাজিদকে নিয়ে।

বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তানোর উপজেলার পাচন্দর ইউনিয়নের কোয়েলহাট পূর্বপাড়া এলাকায় নলকূপ খননের জন্য করা একটি পরিত্যক্ত গর্তে পড়ে যায় ছোট্ট সাজিদ। গর্তটি খড় দিয়ে ঢেকে রাখা ছিল বলে কেউই এর ভেতর বিপদের অস্তিত্ব বুঝতে পারেনি। শিশুটি পড়ে যাওয়ার পর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা কয়েক দফায় ক্যামেরা নামালেও ওপর থেকে পড়া মাটি ও খড়ের স্তূপে শিশুটিকে খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয়নি।

অবশেষে টানা ৩২ ঘণ্টা নিখোঁজ থাকার পর বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) রাত ৯টা ২ মিনিটে তাকে শনাক্ত করা যায়। উদ্ধার করে রাত ৯টা ৩৫ মিনিটে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।

পরিবারের বর্ণনা অনুযায়ী, সাজিদ তার মা ও ভাইয়ের সঙ্গে বাড়ির পাশের জমি পার হচ্ছিল। জমিটি খড় বিছানো ছিল এবং নিচে যে একটি গভীর নলকূপের গর্ত রয়েছে, তা সাজিদের মা রুনা খাতুনও বুঝতে পারেননি। হাঁটার সময় হঠাৎ সাজিদ ‘মা মা’ বলে উঠে হাওয়ায় মিলিয়ে যায়। পিছনে তাকিয়ে রুনা দেখেন, ছেলে নেই—গর্তের ভেতর থেকেই শেষবারের মতো ‘মা, মা’ ডাক উঠে আসছে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই সাজিদ অন্ধকার গর্তের আরও নিচে নেমে যায়।

স্থানীয়রা জানালেন, গত বছর এলাকার এক ব্যক্তি এখানে গভীর নলকূপ বসানোর চেষ্টা করেছিলেন। ১২০ ফুট খনন করেও পানি না পাওয়ায় কাজ অসমাপ্ত রেখে দেওয়া হয়। গর্তটির মুখ ঢেকে না রাখায়, বর্ষার পানিতে এর মুখ আরও প্রশস্ত হয়ে যায়—কোনো সতর্কতা বা সুরক্ষা না থাকায় শেষ পর্যন্ত এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ তাদের।

এ ধরনের অবহেলা যে ছোট্ট একটি প্রাণ কেড়ে নিল, তা আবারও তীব্রভাবে মনে করিয়ে দিল শাহজাহানপুরের সেই বেদনাদায়ক দৃশ্যের কথা।

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement