বর্ষা ঋতুর প্রথম দিন আজ

Published : ১১:৩৫, ১৫ জুন ২০২৫
‘বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল’ দিয়ে প্রণয় নিবেদনের দিন আজ। পঞ্জিকার হিসাবে পহেলা আষাঢ়। মানে বর্ষা ঋতুর প্রথম দিন।
বর্ষা বাঙালির প্রেম, কৃষ্টি, আনন্দ, বেদনা, উৎসব, ব্যবসা-বাণিজ্য, সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে জাগিয়ে তোলে। বর্ষায় সজীব হয়ে উঠবে বাংলার প্রকৃতি। বর্ষা নবধারা জলে ভিজে শীতল হওয়ার আহ্বান জানাবে প্রকৃতিকে। বর্ষার দূত কদম ফুল ফুটতে শুরু করেছে। এ ঋতুর রূপ-ঐশ্বর্যে মুগ্ধ হয়ে অনেক কবি বাংলা সাহিত্যকে ঋদ্ধ করেছেন। বর্ষা ঋতু তার বৈশিষ্ট্যের কারণেই স্বতন্ত্র।
আবহাওয়ার নিরিখে জুন থেকে সেপ্টেম্বর- এ ৪ মাস বর্ষা মৌসুম হলেও বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুসারে আষাঢ়-শ্রাবণকে বর্ষা ঋতু বলা হয়। ষড়ঋতুর এ দেশে বর্ষা অনন্য, তার রূপের সৌন্দর্যে। প্রকৃতি সাজে নবযৌবনের রূপে। পুষ্পে-বৃক্ষ, পত্রপল্লবে পায় নতুন প্রাণের সুর। চারদিকে যেন নব উচ্ছ্বাসের জোয়ার জাগে।
‘বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর নদে এলো বান, শিব ঠাকুরের বিয়ে হবে তিন কন্যা দান’। বর্ষা নিয়ে কাব্যের অভাব নেই বাংলা সাহিত্যে।
দেশের ওপর মৌসুমি বায়ু এখন কম সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে দুর্বল অবস্থায় রয়েছে। এতে ২২ জেলার ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি হয়ে এ তাপপ্রবাহ কমে আসবে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আজ আষাঢ়ের প্রথম দিন থেকে টানা বৃষ্টির আভাস রয়েছে।
আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, রোববার বৃষ্টি হবে, পরের দিন সোমবার থেকে বৃষ্টিপাতের তীব্রতা বাড়বে। ২২ জুন পর্যন্ত সারা দেশে প্রতিদিন বৃষ্টি হবে। টানা বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, রাঙামাটি, কক্সবাজারের পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে। কোথাও কোথাও অস্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা তৈরি হতে পারে। এ সময় দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে কখনো কখনো হতে পারে বজ্রপাত।
তিনি বলেন, বজ্রপাতে অনেক প্রাণহানি হচ্ছে ইদানীং। তাই বজ্রধ্বনি শুনলেই ঘরে যেতে হবে, এ ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। বাংলাদেশে জুন মাসের গড় স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত ৪৫৯.৪ মিলিমিটার, জুলাইয়ে ৫২৩ মিলিমিটার, অগাস্টে ৪২০.৪ মিলিমিটার এবং সেপ্টেম্বর মাসের গড় স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত ৩১৮.২ মিলিমিটার।
আবহাওয়ার নিয়মিত বুলেটিনে বলা হয়, আজ রোববার রংপুর, ময়মনসিংহ, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা ও খুলনা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো বা হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
সেই সঙ্গে সারা দেশে কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি বর্ষণ হতে পারে। এদিন সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
দিনাজপুর ও নীলফামারী জেলার ওপর দিয়ে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। রাজশাহী, পাবনা, ফেনী এবং পটুয়াখালী জেলাসহ খুলনা বিভাগ ও রংপুর বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা কিছু কিছু জায়গা থেকে প্রশমিত হতে পারে।
বাতাসে তাপমাত্রা ৩৬-৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম হলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ ধরা হয়। ৩৮-৪০ ডিগ্রির কম তাপমাত্রাকে বলা হয় মাঝারি এবং ৪০-৪২ ডিগ্রির কম তাপমাত্রাকে তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়। আর তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রির ওপরে উঠলে তাকে বলা হয় অতি তীব্র তাপপ্রবাহ।
বিডি/ও