ধেয়ে আসছে হ্যারিকেন অ্যারিন ঘণ্টায় ২৬০ কিলোমিটার বেগে

Published : ১০:২৪, ১৭ আগস্ট ২০২৫
মাত্র এক দিনের ব্যবধানে দ্রুত শক্তি অর্জন করে মহাশক্তিশালী ক্যাটাগরি-৫ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে হ্যারিকেন অ্যারিন। ঝড়টির স্থায়ী বাতাসের গতি বর্তমানে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৬০ মাইল বা প্রায় ২৬০ কিলোমিটার, যা বিপর্যয়কর প্রভাব ফেলতে সক্ষম। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, ঝড়টি আরও শক্তি সঞ্চয় করতে পারে।
অ্যারিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় পুরো পূর্ব উপকূলে প্রাণঘাতী ঢেউ এবং বিপজ্জনক রিপ কারেন্ট তৈরি করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। রিপ কারেন্ট হলো সমুদ্র সৈকতের কাছে সৃষ্টি হওয়া সংকীর্ণ কিন্তু প্রবল স্রোত, যা সৈকত থেকে দূরে গভীর সমুদ্রে প্রবাহিত হয় এবং প্রাণঘাতী পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।
ঝড়টি বর্তমানে ক্যারিবীয় সাগরে অবস্থান করছে। এ সপ্তাহান্তে এটি লিওয়ার্ড দ্বীপপুঞ্জ, ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জ ও পুয়ের্তো রিকোর উত্তর দিক দিয়ে অতিক্রম করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এসব অঞ্চলে সর্বোচ্চ ১৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হতে পারে, যা আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসের ঝুঁকি বাড়াবে। যদিও আপাতত যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে সরাসরি আঘাত হানার আশঙ্কা নেই, তবে উপকূলবর্তী এলাকায় বিপজ্জনক ঢেউ ও সমুদ্রের অস্বাভাবিক স্রোত দেখা দেবে বলে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
মাত্র ২৪ ঘণ্টায় অ্যারিনের বাতাসের গতি অন্তত ৩৪ মাইল বেড়ে গেছে। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত এটি একটি সাধারণ ট্রপিক্যাল স্টর্ম ছিল, তবে শনিবার ভোরে ঘণ্টায় ১০০ মাইল থেকে বেড়ে ১৬০ মাইল বা ২৬০ কিলোমিটারে পৌঁছায়, যা এর “বিস্ফোরক শক্তি অর্জন” নির্দেশ করে।
আগামী সপ্তাহে অ্যারিন ধীরে ধীরে উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে বাহামার পূর্ব দিক ঘেঁষে উত্তর ক্যারোলিনার আউটার ব্যাংকস অঞ্চলের দিকে যাবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এ সময় ফ্লোরিডা ও মিড-অ্যাটলান্টিক উপকূলীয় এলাকায় ঢেউ সবচেয়ে বিপজ্জনক হবে বলে সতর্ক করা হয়েছে। বারমুডাতেও প্রাণঘাতী ঢেউ এবং ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
ঝড়ের কারণে যুক্তরাষ্ট্র কোস্টগার্ড ইতোমধ্যেই সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জের সেন্ট থমাস ও সেন্ট জন দ্বীপের বন্দর এবং পুয়ের্তো রিকোর বেশ কয়েকটি এলাকায় জাহাজ চলাচলে বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, চলতি বছর আটলান্টিক মৌসুমে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি সংখ্যক হ্যারিকেন হতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্যাটাগরি-৪ ও ক্যাটাগরি-৫ মাত্রার ঝড়ের সংখ্যা বাড়ছে, যা উপকূলীয় মানুষের জীবিকা ও নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
BD/AN