তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানকে উপহার ওমর (রা.)-এর স্বাক্ষরিত ঐতিহাসিক দলিলের প্রতিলিপি

তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানকে উপহার ওমর (রা.)-এর স্বাক্ষরিত ঐতিহাসিক দলিলের প্রতিলিপি ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ২১:১২, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানকে ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর (রা.)-এর স্বাক্ষরিত ঐতিহাসিক এক চুক্তিপত্রের প্রতিলিপি উপহার দিয়েছেন জেরুজালেমের গ্রিক অর্থোডক্স পাদরি থিওফিলোস জিয়ানোপোলোস। ৬৩৮ খ্রিষ্টাব্দে জেরুজালেম বিজয়ের পর খ্রিষ্টানদের নিরাপত্তা ও ধর্মীয় স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দিয়ে যে চুক্তি

তে স্বাক্ষর করেছিলেন হজরত ওমর (রা.), সেটির প্রতিলিপিই এরদোয়ানের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

তুর্কি সংবাদ সংস্থা আনাদোলুর প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) ইস্তাম্বুলের দোলমাবাহচে প্রাসাদে তুর্কি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন পাদরি থিওফিলোস জিয়ানোপোলোস। এ সময় তিনি চুক্তিপত্রটি এরদোয়ানের হাতে তুলে দেন। বৈঠকে গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন, জেরুজালেমের ধর্মীয় পবিত্র স্থানগুলোর সুরক্ষা এবং মুসলিম-খ্রিষ্টানসহ নানা ধর্মাবলম্বীর সহাবস্থান নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। উপস্থিত ছিলেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান, প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা আকিফ চাগাতায় কিলিচ ও যোগাযোগ পরিচালক বুরহানেত্তিন দুরান।

ইতিহাসে দেখা যায়, বাইজেন্টাইনদের কাছ থেকে মুসলিম বাহিনী জেরুজালেম জয় করার পর স্থানীয় খ্রিষ্টানরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল। তারা ভেবেছিল নতুন শাসকরা হয়তো তাদের গির্জা ভেঙে দেবে বা জোরপূর্বক ধর্মান্তর করবে। কিন্তু বাস্তবে ঘটেছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন দৃশ্য। হজরত ওমর (রা.) শহরে সাধারণ মানুষের মতো প্রবেশ করে নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং শান্তি ও নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিয়ে ঐতিহাসিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

সেই দলিলের প্রতিলিপি পেয়ে এরদোয়ান বৈঠকে বলেন, ইসরাইলের কর্মকাণ্ড জেরুজালেমের ঐতিহাসিক মর্যাদা ও পবিত্রতাকে ধ্বংস করছে এবং মুসলিম-খ্রিষ্টান-ইহুদিদের সহাবস্থানের ঐতিহ্যকে হুমকির মুখে ফেলছে। তিনি ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে অভিযুক্ত করে বলেন, ‘তিনি ভয়াবহ গণহত্যার নকশা বাস্তবায়ন করছেন। চার্চ ও মসজিদ কোনোটিই তার আগ্রাসন থেকে রক্ষা পাচ্ছে না।’

এরদোয়ান আশা প্রকাশ করেন, মুসলিম ও খ্রিষ্টানদের পবিত্র স্থানগুলোর সুরক্ষায় আরও নিবিড় সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। আঙ্কারা দীর্ঘদিন ধরেই পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে অবস্থান নিয়ে আসছে। তুরস্কের মতে, এটিই ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংকটের একমাত্র স্থায়ী সমাধান।

এর আগে গত জুলাইয়ে জেরুজালেমের এই পাদরি জিয়ানোপোলোস ও লাতিন প্যাট্রিয়ার্ক পিজ্জাবাল্লা গাজায় গিয়ে ধ্বংসযজ্ঞ সরেজমিনে দেখেছিলেন। তখন ইসরাইলি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হোলি ফ্যামিলি চার্চে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎও করেছিলেন তারা।

BD/AN

শেয়ার করুনঃ
Advertisement