কলম্বিয়া বহিষ্কার করলো ইসরায়েলের কূটনীতিকদের

লাতিন আমেরিকার দেশ কলম্বিয়ার রাষ্ট্রপতি গুস্তাভো পেত্রো ইসরায়েলের সমস্ত কূটনৈতিক প্রতিনিধিকে বহিষ্কারের নির্দেশ দিয়েছেন। এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় থাকা দুই কলম্বিয়ান নাগরিককে ইসরায়েলি বাহিনী আটক করার পর।

বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।

আটককৃত নাগরিকরা হলেন—মানুয়েলা বেদোয়া ও লুনা বারেতো। তারা ছিলেন ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’-এর ক্রু সদস্য।

গ্লোবাল মুভমেন্ট টু গাজার এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ফ্লোটিলা ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে পৌঁছালে ইসরায়েলি সেনারা বেআইনিভাবে ওই দুই নারীকে আটক করে। এই ঘটনা ঘটেছে গাজা উপকূল থেকে প্রায় ১৫০ নটিক্যাল মাইল দূরে।

বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, আগের ফ্লোটিলাগুলোও ইসরায়েলের আক্রমণ বা আটককরণের শিকার হয়েছে। এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক আইন ও জেনেভা কনভেনশনের লঙ্ঘন হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।

পেত্রো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে সতর্কবার্তা দিয়ে বলেন, যদি এটি সত্য হয়, তবে এটি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নতুন আন্তর্জাতিক অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।

তিনি আরও জানান, ইসরায়েলের সঙ্গে করা মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি তাৎক্ষণিকভাবে বাতিল করা হচ্ছে। এর আগে এই সপ্তাহেই তিনি ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি স্থগিত করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।

পেত্রো উল্লেখ করেন, চলতি বছরের মে মাসেই কলম্বিয়া ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল। এবার তিনি আরও এক ধাপ এগিয়ে বাকি থাকা সমস্ত কূটনৈতিককে দ্রুত কলম্বিয়া ত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছেন।

তিনি জানান, এই ঘটনার পর কলম্বিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মামলা করবে, যার মধ্যে ইসরায়েলি আদালতেও মামলা অন্তর্ভুক্ত থাকবে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আইনজীবীদের কলম্বিয়ার আইনজীবী দলকে সহায়তা করার আহ্বান জানান।

এর আগে, গত মাসের শেষ দিকে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে কলম্বিয়ার রাষ্ট্রপতি গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা অভিযানের বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনা করেছিলেন।

নিজের বক্তব্যে পেত্রো ইসরায়েলকে 'নাৎসি' আখ্যা দিয়ে ফিলিস্তিনিদের ওপর গণহত্যার অভিযোগ তুলেছেন। তিনি প্রস্তাব দেন, এশিয়ার দেশগুলোর নেতৃত্বে একটি আন্তর্জাতিক সামরিক জোট গড়ে তুলে ফিলিস্তিনকে মুক্ত করতে হবে। একই সঙ্গে ইসরায়েলে অস্ত্রবাহী জাহাজ পাঠানো বন্ধ করার আহ্বান জানান।

পেত্রো তার ভাষণে বলেন, “ভদ্রমহোদয়গণ, কোনো জাতিই শ্রেষ্ঠ নয়। ঈশ্বরের মনোনীত জাতি বলেও কিছু নেই। সেটা যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরায়েল- যে জাতিই হোক না কেন। শুধুমাত্র অজ্ঞ ও ধর্মান্ধরা এমনটি ভাবতে পারে। আসলে ঈশ্বরের মনোনীত জাতি হলো পুরো মানবজাতি।”