আইফেল টাওয়ার ভাঙার গুজব, কি সত্যিই হচ্ছে?

Published : ১৯:৩১, ১২ অক্টোবর ২০২৫
প্যারিসের বিখ্যাত লৌহ কাঠামোর স্মৃতিস্তম্ভ আইফেল টাওয়ারকে ২০২৬ সালে ভেঙে ফেলার গুজব সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ায় বিশ্বজুড়ে ফরাসি ঐতিহ্যপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ ও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
তবে এই দাবিটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং এর উৎপত্তি একটি ব্যঙ্গাত্মক সংবাদ থেকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে কারণগুলো প্রচার করা হচ্ছে—টাওয়ারটির অপারেটিং লিজ শেষ হওয়া, কাঠামোগত দুর্বলতা বা দর্শক কমে যাওয়া—তার কোনোটিই সত্য নয়। খবর প্রকাশ করেছে হিন্দুস্তান টাইমস।
গুজবটির উৎপত্তি মূলত ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে ট্যাপিওকা টাইমস (Tapioca Times) নামের একটি ব্যঙ্গাত্মক ওয়েবসাইটে প্রকাশিত নিবন্ধ থেকে। এই ওয়েবসাইটটি সাধারণত বিদ্রূপাত্মক বা প্যারোডি কন্টেন্টের জন্য পরিচিত।
নিবন্ধটিতে একটি কাল্পনিক মুখপাত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে মজা করে বলা হয়েছিল যে, “টাওয়ারটি দীর্ঘদিন জনপ্রিয় থাকার পর এখন আর কেউ সেখানে যায় না, তাই আমরা এটি বন্ধ করে দিচ্ছি।”
নিবন্ধটিতে আরও বলা হয়েছিল যে, আইফেল টাওয়ার ভেঙে ওয়াটার স্লাইড বা প্যারিস বার্নিং ম্যান ফেস্টিভ্যালের মতো হাস্যকর বিকল্প করা যেতে পারে। এই ব্যঙ্গাত্মক বর্ণনা দ্রুত সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স (সাবেক টুইটার) সহ অন্যান্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ভাইরাল হয়ে গিয়েছে।
আইফেল টাওয়ার পরিচালনার দায়িত্বে থাকা এসইটিই (SETE) জানিয়েছে, প্যারিস সিটি বা ফরাসি ঐতিহ্য সংরক্ষণকারী কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে স্মৃতিস্তম্ভটি ভেঙে ফেলার কোনো পরিকল্পনা নেই। এই দাবির পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণও নেই।
বর্তমানে টাওয়ার সাময়িকভাবে বন্ধ থাকলেও এটি গুজবকে আরও উসকে দিয়েছে। তবে এই বন্ধ থাকার কারণ কোনো ধ্বংসের পরিকল্পনা নয়; বরং ফ্রান্সজুড়ে চলমান শ্রমিক ধর্মঘটের ফল।
সরকারি ব্যয় হ্রাস এবং ধনীদের ওপর উচ্চ করের দাবিতে ধর্মঘটের কারণে এসইটিই-এর কর্মীসহ অন্যান্য কর্মীদের কার্যক্রমে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়েছে। কর্তৃপক্ষ আশা করছে, ধর্মঘট শেষ হলে টাওয়ারটি শিগগিরই স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরবে।
মিডিয়া বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন যে, ডিজিটাল যুগে এমন ব্যঙ্গাত্মক নিবন্ধকে মূল প্রসঙ্গ থেকে বিচ্ছিন্ন করে সত্য হিসেবে প্রচার করার ঘটনা ক্রমশ বাড়ছে, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে।
বিডি/এএন