বাংলাদেশের আগামী সরকার যেই হোক, পাশে থাকবে ভারত

Published : ১৬:২০, ৬ অক্টোবর ২০২৫
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির দিকে গভীর নজর রাখছে প্রতিবেশী ভারত। তবে ভোটের ফলাফল যাই হোক না কেন, জনগণের রায় অনুযায়ী নির্বাচিত সরকারের সঙ্গেই কাজ করার অঙ্গীকার করেছে দেশটি।
সোমবার (৬ অক্টোবর) নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সংবাদিকদের সংগঠন ডিক্যাবের (Diplomatic Correspondents Association, Bangladesh) সঙ্গে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এমন মন্তব্য করেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক, এটাই ভারতের প্রত্যাশা। নির্বাচনের মাধ্যমে যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক না কেন, তাদের সঙ্গেই কাজ করতে ভারত প্রস্তুত।”
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষণার প্রতি আস্থা জানিয়ে বিক্রম মিশ্রি বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ইতোমধ্যেই জানিয়েছে যে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমরা আশা করি, সেই প্রতিশ্রুত সময়সূচিই রক্ষা করা হবে। ভারত চায়, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াই হোক সরকারের ভিত্তি।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ আমাদের অন্যতম ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী ও কৌশলগত অংশীদার। সম্পর্ককে শক্তিশালী রাখতে উভয় পক্ষেরই উচিত প্রতিহিংসাপূর্ণ বক্তব্য বা ভুল ব্যাখ্যা এড়িয়ে চলা। দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতা ইতোমধ্যেই বহু ক্ষেত্রে বিস্তৃত হয়েছে।”
বিক্রম মিশ্রি উল্লেখ করেন, “ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিই প্রথম বিশ্বনেতা, যিনি তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এটি ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের প্রতি শুভকামনার প্রতিফলন।”
ভিসা কার্যক্রম প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “যদিও বর্তমানে ভিসা প্রদানের প্রক্রিয়া কিছুটা সীমিত, তবুও ঢাকা এখনো বিশ্বজুড়ে ভারতীয় ভিসার সবচেয়ে বড় উৎস। ভারত সবসময় দুই দেশের জনগণের পারস্পরিক সংযোগ ও সম্পর্ককে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকে।”
আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও সহযোগিতা নিয়ে আলোচনায় বিক্রম মিশ্রি বলেন, “বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে আমরা যৌথভাবে নিরাপত্তা ইস্যুতে কাজ করছি। ভারতের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, এই অঞ্চলে শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং চরমপন্থার বিস্তার রোধ করা।”
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়ার অনুরোধ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “এটি একটি আইনি বিষয়, তাই এ নিয়ে বিস্তারিত মন্তব্য করা সমীচীন হবে না।”
গঙ্গা নদীর পানি বণ্টন ও তিস্তা প্রকল্পের অগ্রগতি প্রসঙ্গে ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব বলেন, “এই দুইটি বিষয়েই বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আলোচনার ধারাবাহিকতা বজায় আছে। পারস্পরিক বোঝাপড়া ও যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমেই আমরা টেকসই সমাধানের পথে এগোচ্ছি।”
বিডি/এএন