ইউরোপের আরও এক দেশে পর্দা করা নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছে

ইউরোপের আরও এক দেশে পর্দা করা নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছে ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১২:১৭, ১৮ অক্টোবর ২০২৫

ইউরোপের আরও একটি দেশ এবার নিকাব ও বোরকা নিষিদ্ধের পথে হাঁটছে। দক্ষিণ ইউরোপের দেশ পর্তুগালে জনসমক্ষে নিকাব ও বোরকা পরা নিষিদ্ধের প্রস্তাব পাস করেছে দেশটির পার্লামেন্ট।

বিলটি আইনে পরিণত হলে ইউরোপের নিকাববিরোধী দেশগুলোর তালিকায় যুক্ত হবে পর্তুগালের নামও।

‘লিঙ্গভিত্তিক ও ধর্মীয় কারণে মুখ ঢেকে রাখা পোশাক নিষিদ্ধকরণ বিল’ শিরোনামে প্রস্তাবটি উত্থাপন করে দেশটির কট্টর ডানপন্থি রাজনৈতিক দল চেগা পার্টি। দলটির দাবি, এই বিল নারীর স্বাধীনতা ও ইউরোপীয় মূল্যবোধ রক্ষার জন্য একটি “ঐতিহাসিক পদক্ষেপ”।

শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত পর্তুগালের সংসদ অধিবেশনে বিলটি সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে পাস হয়। এতে বলা হয়েছে, জনসমক্ষে বা উন্মুক্ত স্থানে কেউ নিকাব পরলে তাকে ২০০ থেকে ৪ হাজার ইউরো পর্যন্ত জরিমানা করা হতে পারে। আবার, কাউকে জোর করে নিকাব পরাতে বাধ্য করলে সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ডের বিধানও রাখা হয়েছে।

তবে কিছু ব্যতিক্রম থাকবে—যেমন উড়োজাহাজ, কূটনৈতিক এলাকা এবং উপাসনালয়–এ নিকাব পরার অনুমতি দেওয়া হবে।

তবে এখনই এটি আইন হিসেবে কার্যকর হচ্ছে না। বিলটি পাঠানো হয়েছে সংসদের সাংবিধানিক বিষয়ক স্থায়ী কমিটিতে, যেখানে এটি পর্যালোচনা করা হবে। পরবর্তীতে প্রেসিডেন্ট মার্সেলো রেবেলো ডি সুজা সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি বিলটিতে স্বাক্ষর করবেন নাকি তা সাংবিধানিক আদালতে পুনর্বিবেচনার জন্য পাঠাবেন।

ইতোমধ্যে ফ্রান্স, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ডস জনসমক্ষে নিকাব বা বোরকা পরা আংশিক বা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছে। পর্তুগালও সেই ধারায় যুক্ত হতে যাচ্ছে।

বিল উত্থাপনকারী চেগা পার্টির নেতা আন্দ্রে ভেনচুরা বলেন, “আজ আমরা আমাদের মেয়েদের বোরকা থেকে মুক্ত করেছি। এটি নারীর মুক্তি ও ইউরোপীয় সংস্কৃতি রক্ষার দিন।”

অন্যদিকে, বামপন্থি নারী আইনপ্রণেতারা এই পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, এটি ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ এবং মুসলিম নারীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ।

ক্ষমতাসীন সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির এমপি আন্দ্রেয়া নেটো বলেন, “এটি নারী-পুরুষের সমতা প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজনীয়। কোনো নারীকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে মুখ ঢেকে রাখতে বাধ্য করা উচিত নয়।”

তবে পার্লামেন্টের ১০টি দলের মধ্যে ২টি দল—পিপল-অ্যানিমেলস-নেচার পার্টি ও টুগেদার ফর দ্য পিপল পার্টি—ভোট দেয়া থেকে বিরত থেকেছে। তাদের মতে, এই বিল সমাজে ধর্মীয় বিভাজন ও বৈষম্য উসকে দিতে পারে।

এদিকে, মানবাধিকার সংস্থা ও পর্তুগালের মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে বিলটি নিয়ে গভীর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। তাদের মতে, দীর্ঘদিন ধরে পর্তুগাল ধর্মীয় সহনশীলতার উদাহরণ হয়ে থাকলেও এই সিদ্ধান্ত দেশটির উদার ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement