কী হয় নারীরা প্রতিদিন ডিম খেলে?

কী হয় নারীরা প্রতিদিন ডিম খেলে? ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ০১:৪৪, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫

নিরবচ্ছিন্ন সময় ধরে আমাদের খাদ্যতালিকায় একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান ধরে রেখেছে একটি খাবার—ডিম। বিশেষ করে নারীদের জন্য, জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে শরীরের পুষ্টির চাহিদা বদলায় এবং সেই চাহিদা পূরণে ডিমের ভূমিকা অনন্য।

ডিম শুধু সহজলভ্য বা সাশ্রয়ী নয়, পুষ্টিগুণের দিক থেকেও এটি অত্যন্ত সমৃদ্ধ। নিয়মিত ডিম খাওয়া নারীদের শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি, মানসিক স্থিতি বজায় রাখা এবং দীর্ঘমেয়াদি সুস্থতা অর্জনে সহায়ক।

নারীদের স্বাস্থ্যের জন্য ডিমের গুরুত্ব:

চোখের স্বাস্থ্য রক্ষায় ডিম একটি গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য। কুসুমে থাকা লুটেইন ও জেক্সানথিন অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রেটিনায় জমা হয়ে বয়সজনিত চোখের সমস্যার ঝুঁকি কমায়। যারা দীর্ঘ সময় কম্পিউটার বা মোবাইল স্ক্রিনের সামনে থাকে, তাদের চোখের ক্লান্তি কমাতে ডিম সহায়ক।

হরমোনের ভারসাম্য রক্ষাতেও ডিম গুরুত্বপূর্ণ। মাসিক চক্র, উর্বরতা, গর্ভধারণ বা মেনোপজের সময় হরমোনের সঠিক কাজের জন্য কোলিন, ভিটামিন বি১২, ফোলেট এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট সাহায্য করে। ফলে মাসিক অনিয়ম কমতে পারে এবং প্রজনন স্বাস্থ্য উন্নত হয়। মাতৃত্বের পরিকল্পনা করছেন এমন নারীদের খাদ্যতালিকায় ডিম রাখা বিশেষভাবে উপকারী।

পেশির শক্তি পুনরুদ্ধারে ডিমের ভূমিকা অনস্বীকার্য। বয়স বাড়ার সঙ্গে ধীরে পেশির ভর হারায়, ডিমে থাকা উচ্চমানের প্রোটিন পেশি গঠনে এবং শরীরচর্চা বা দৈনন্দিন পরিশ্রমের পরে দ্রুত পুনরুদ্ধারে সাহায্য করে। ভিটামিন ডি পেশির কার্যকারিতা বাড়ায় এবং শরীরকে সক্রিয় রাখে।

হাড়ের স্বাস্থ্যও নারীদের জন্য একটি বড় উদ্বেগের বিষয়। ডিমে থাকা ফসফরাস, সেলেনিয়াম ও ভিটামিন ডি হাড়ের ঘনত্ব বজায় রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত ডিম খেলে অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি কমে এবং হাড় দীর্ঘদিন মজবুত থাকে। এটি গর্ভবতী ও বয়স্ক নারীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

ডিম বিপাক ক্রিয়া বা মেটাবলিজম ঠিক রাখতে কার্যকর। সকালের টিফিনে ডিম খেলে সারা দিনে ক্যালরি গ্রহণ স্বাভাবিক থাকে। ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে এটি আদর্শ খাবার, দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে এবং অপ্রয়োজনীয় খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমায়।

মানসিক স্বাস্থ্য ও মস্তিষ্কের কার্যকারিতাতেও ডিম গুরুত্বপূর্ণ। এতে থাকা কোলিন স্মৃতিশক্তি, মনোযোগ এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা বাড়ায়। আধুনিক জীবনে নারীরা একসঙ্গে বহু দায়িত্ব সামলায়, যার ফলে মানসিক চাপ বেড়ে যায়। নিয়মিত ডিম খাওয়া মানসিক স্থিতি বজায় রাখতে এবং জ্ঞান সংক্রান্ত ক্ষমতা ভালো রাখতে সহায়ক।

ত্বক ও চুলের সৌন্দর্য রক্ষাতেও ডিম কার্যকর। এতে থাকা বায়োটিন ও প্রোটিন ত্বককে উজ্জ্বল করে এবং চুলের গোড়া মজবুত করে। চুল পড়া বা নিস্তেজ ত্বকের সমস্যায় ভুগছেন এমন নারীরা ডিম খাদ্যতালিকায় রাখলে উপকৃত হতে পারেন।

অতএব, ডিম শুধু একটি সাধারণ খাবার নয়, এটি নারীদের সার্বিক সুস্থতার জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ পুষ্টির উৎস। নিয়মিত এবং পরিমিত ডিম খাওয়া শরীর ও মন—উভয়ই সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। তবে বিশেষ স্বাস্থ্য সমস্যা বা অ্যালার্জি থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে হবে। সচেতন খাদ্যাভ্যাসের অংশ হিসেবে ডিমকে অন্তর্ভুক্ত করলে নারীদের জীবন আরও শক্তিশালী, সুস্থ এবং প্রাণবন্ত হয়ে উঠতে পারে।

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement