জাপার দুর্গ রংপুর-৩ আসন দখলে নিতে মাঠে বিএনপি-জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলন

জাপার দুর্গ রংপুর-৩ আসন দখলে নিতে মাঠে বিএনপি-জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলন ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ২১:৩১, ১৫ নভেম্বর ২০২৫

সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদের নিজ জেলা রংপুরে ছয়টি সংসদীয় আসনে জমে উঠেছে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা। প্রায় চার মাস আগে গত ৫ জুলাই নিজেদের সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

আর গত ৩ নভেম্বর বিএনপির প্রার্থী ঘোষণার পর আসনগুলোতে বইতে শুরু করেছে নির্বাচনী আমেজ। বড় এই দুই দলের মনোনীত প্রার্থীরা প্রতিদিন সভা-সমাবেশ, মিছিল, উঠান বৈঠকসহ নানা কর্মসূচি পালন করছেন।

জেলার ছয়টি আসনের মধ্যে রংপুর-৩ আসনে দল মনোনীত প্রার্থীকে নিয়ে বিএনপিতে রয়েছে অসন্তোষ। দলীয় কোন্দলমুক্ত জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন আগে থেকেই গণসংযোগ শুরু করেছে। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) প্রার্থী ঘোষণা না করলেও ফেস্টুন-পোস্টারে জানান দিচ্ছেন দলটির নেতারা।

চব্বিশের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রংপুরে জাতীয় পার্টি (জাপা) মাঠে থাকলেও নেই আগের মতো শক্ত অবস্থান। এখন মাঠে বিএনপি ও জামায়াতের প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারণায় এগিয়ে থাকলেও শেষ পর্যন্ত জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নিলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা আরও তুঙ্গে উঠবে। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর-৩ আসনের নির্বাচনী হালচাল।

জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে ২১নং আসন হচ্ছে রংপুর-৩ (সদর) আসন। রংপুর সিটি কর্পোরেশনের ৯ থেকে ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড ও সদর উপজেলার ৫ ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত রংপুর-৩ আসন। সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদের জাতীয় পার্টির দুর্গখ্যাত এই আসনে শুধু একবারই জয় পেয়েছে বিএনপি। সেটা ছিল ১৯৭৯ সালের নির্বাচন। এখানে ধানের শীষ প্রতীকে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন অ্যাডভোকেট রেজাউল হক সরকার রানা।

সমৃদ্ধ রংপুর রূপকল্পে বিএনপি ও সামুর স্বপ্ন
এবার রংপুর-৩ আসনে নিজেদের অবস্থান বেশ শক্ত মনে করছেন বিএনপি। দল থেকে রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামুকে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

তবে তার প্রতি নাখোশ মনোনয়নবঞ্চিত মহানগর বিএপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাহফুজ উন-নবী ডনের কর্মী-সমর্থকরা। প্রার্থী পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আমলের মন্ত্রী মশিউর রহমান যাদু মিয়ার কন্যা রিটা রহমান। জানা যায়, দল মনোনীত সামসুজ্জামান সামু রংপুর মহানগর বিএনপির সাধারণ স¤পাদক ছিলেন।

এর আগে, তিনি জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক, মহানগরের সিনিয়র সহসভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতির আষ্টেপৃষ্টে বেড়ে ওঠা সামসুজ্জামান সামু কারমাইকেল কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ স¤পাদক ও সভাপতি এবং পরবর্তীতে জেলা ছাত্রদলের একই পদে নেতৃত্বে ছিলেন।

তিনি ছিলেন রাজশাহী বিভাগীয় ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক স¤পাদক। সামসুজ্জামান সামু বলেন, সবদিক বিবেচনা করে দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে। সুনির্দিষ্ট উন্নয়ন পরিকল্পনা তুলে ধরে বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ শুরু করেছি। সভা-সমাবেশ ও উঠান বৈঠক করতেছি। সাধারণ মানুষের কাছ থেকে তাদের প্রত্যাশার কথা শোনার সঙ্গে পরামর্শও নিচ্ছি। আশা করছি, আগামী নির্বাচনে রংপুরে বিএনপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে।

রংপুর-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী দলটির মহানগরের আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামু ৯০ এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে রাজপথে সম্মুখসারিতে থাকা বিএনপির এই নেতা হাসিনাবিরোধী আন্দোলনেও ছিলেন অগ্রভাগে। তিনি স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলে সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য পরিষদের সভাপতি ছিলেন। দীর্ঘ সময় ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির এই নেতার বিরুদ্ধে ৫০টির বেশি মামলা হয়।

তিনি ২০ বার কারাবরণ করেন। শুধু জুলাই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ৫ আগস্টের আগে তার নামে ২৫টি মামলা দেওয়া হয়। এমএ ডিগ্রি অর্জন করা সামসুজ্জামান সামু বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, স্বেচ্ছাসেবী, ক্রীড়া ও পেশাজীবী সংগঠনসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন।

পেশায় ব্যবসায়ী বিএনপির এই নেতা ১৯৯২ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সফর সঙ্গী হিসেবে ওআইসির শীর্ষ সম্মেলনে সেনেগাল সফর করেন। রংপুর-৩ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচিত হয়ে সমৃদ্ধ রংপুর গড়তে চান সামসুজ্জামান সামু। এ জন্য অবহেলিত রংপুরকে এগিয়ে নিতে উন্নয়ন রূপকল্পে ১৯টি প্রস্তাবনা তুলে ধরে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন এই নেতা।

সমৃদ্ধ রংপুর রূপকল্পে তরুণদের স্বনির্ভরতার ক্ষেত্রে বিকল্প ক্ষেত্র প্রস্তুত, কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কার্যকর কৌশল গ্রহণ ও বাস্তবায়ন, শিক্ষিত বেকারদের জন্য জামানতবিহীন ঋণ কর্মসূচির ব্যবস্থা, শিল্পায়নে বন্ধাত্ব ঘোচানো, জাতীয় বাজেটে রংপুরের জন্য বৈষম্য হ্রাস ও ন্যায্যহিস্যা নিশ্চিতকরণ, নারীর ক্ষমতায়নে বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন, স্বাধীন কণ্ঠস্বর প্রকাশের ক্ষেত্র ও পরিবেশ তৈরি, শ্যামাসুন্দরী খালকে নগরবাসীর স্বাস্থ্য ও পরিবেশবান্ধব করা এবং রংপুরকে তথ্যপ্রযুক্তি, শিক্ষা ও স্বাস্থের হাব হিসেবে গড়ে তোলার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করে ভোটারদের কাছে টানতে চেষ্টা করছেন বৈষম্যবিরোধী নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামু।

 শুধু প্রচারণা নয়, কথা-কাজেও জিততে চান জামায়াতের বেলাল
রংপুর-৩ আসনে জাতীয় পার্টি মাঠে না থাকায় আপাতত প্রচার-প্রচারণায় বিএনপির চেয়ে এগিয়ে জামায়াতে ইসলামী। দলীয় কোন্দলমুক্ত জামায়াতের প্রার্থী কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল। তিনি প্রায় বছর ধরে ভোটার টানতে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।

এর আগে, রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থীতা করতে আগ্রহ প্রকাশ করে ব্যাপক প্রচারণা চালালেও দলীয় সিদ্ধান্তের কারণে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ নেননি। তবে এবার সংসদ নির্বাচনে তাকে ঘিরে দাঁড়িপাল্লার বিজয়ের মধ্যদিয়ে রংপুর-৩ আসনে জামায়াতে ইসলামীর সুদৃঢ় অবস্থানের জানান দিতে চান দলটির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।

লম্বা লম্বা প্রতিশ্রুতি দিয়ে নয়, ।নির্বাচিত হলে আইন প্রণয়নে সংসদে দাঁড়িয়ে কথা বলার পাশাপাশি রংপুরকে উন্নয়নে এগিয়ে নিতে শ্যামাসুন্দরী খাল সংস্কার, তিস্তা মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়নসহ একটি পরিকল্পিত সবুজ-সমৃদ্ধ-উন্নত রংপুর সাজানোর জন্য বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবো।

রংপুর-৩ আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী দলটির কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল বর্তমানে পরিবহন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। তিনি শিক্ষাজীবন শেষে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। পরবর্তীতে রাণীপুকুর কলেজে যোগদান করেন এবং সহকারী অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে অবসরে যান।

মাহবুবুর রহমান বেলাল ১৯৮৪ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অর্থনীতিতে বিএ অনার্স এবং একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৬ সালে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রতিষ্ঠাকালীন কারমাইকেল কলেজ শাখার সভাপতি, পরে রংপুর শহর শাখার সভাপতি, অবিভক্ত ঢাকা মহানগরী সেক্রেটারি, কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য এবং কেন্দ্রীয় প্রচার স¤পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

ছাত্রজীবন শেষে তিনি জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেন এবং বিভিন্ন সময়ে রংপুর শহর শাখার আমির, জেলার সেক্রেটারি ও আমির এবং মহানগরীর আমির হিসেবে দীর্ঘসময় পদে ছিলেন। বর্তমানে তিনি জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চল পরিচালনা কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। রাজনৈতিক কারণে ২০১৮ সালে তিনি ছয় মাস কারাভোগ করেন।

জামিন মিললেও জেলগেট থেকে তাকে তিনবার গ্রেফতার করা হয়। চব্বিশের জুলাই আন্দোলনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। রাজনীতি ও পরিবহন ব্যবসার পাশাপাশি তিনি জনকল্যাণ ও সমাজসেবামূলক বিভিন্ন কর্মকান্ডে নিবিড়ভাবে জড়িত। ইসলামী ব্যাংক কমিউনিটি হাসপাতাল, আল-আমিন ট্রাস্ট, রংপুর মডেল কলেজ ও জেলা মটর মালিক সমিতিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তার স¤পৃক্ততা রয়েছে।

মাহবুবুর রহমান বেলাল দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে ভোট চেয়ে বলেন, মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও দুর্নীতিমুক্ত বৈষম্যহীন পরিকল্পিত রংপুর গড়তে আমি কাজ করতে চাই। আমার জন্ম রংপুরে, আমি এ শহরের মানুষ। আমাকে যখন যার প্রয়োজন, ডাকলেই সাড়া দেবো। লম্বা লম্বা প্রতিশ্রুতি দিয়ে নয়, কথা এবং কাজে আগামীতে প্রমাণ দিতে চাই জামায়াতে ইসলামী জনকল্যাণে মানুষের জন্য কাজ করে।

আমি নির্বাচিত হলে আইন প্রণয়নে সংসদে দাঁড়িয়ে কথা বলার পাশাপাশি রংপুরকে উন্নয়নে এগিয়ে নিতে শ্যামাসুন্দরী খাল সংস্কার,তিস্ত মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়নসহ একটি পরিকল্পিত সবুজ-সমৃদ্ধ-উন্নত রংপুর সাজানোর জন্য বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবো।

হাতপাখার চমক দেখাতে চান পিয়াল
রংপুর সিটি কর্পোরেশনের সবশেষ নির্বাচনে মেয়র পদে বড় ব্যবধানে পুনর্নির্বাচিত হয়েছিলেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। লাঙ্গল প্রতীকে মোস্তফা পেয়েছিলেন ১ লক্ষ ৪৬ হাজার ৭৯৮ ভোট।

দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী (হাতপাখা প্রতীক) আমিরুজ্জামান পিয়াল। তিনি পেয়েছিলেন ৪৯ হাজার ৮৯২ ভোট। এবার সংসদ নির্বাচনে সেই প্রার্থীকে ঘিরেই চমক দেখাতে ভোটারদের কাছে টানছেন দলটির নেতাকর্মীরা।

ইসলামীধারার রাজনীতিতে আমিরুজ্জামান পিয়াল এখন পরিচিত মুখ হলেও তার ছাত্রজীবন ছিল বামপন্থি ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে। তিনি রাজনীতির শুরুতে জাসদ-ছাত্রলীগ করতেন। পরবর্তীতে ১৯৯৮ সালে ইসলামী আন্দোলনের রাজনীতিতে যোগদান করেন।

১০ ভাই-বোনের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ আমিরুজ্জামান। ভাই-বোনদের মধ্যে বেশির ভাগই চিকিৎসক। বিএ পাস করা আমিরুজ্জামান পিয়ালই ব্যবসার পাশাপাশি রাজনীতিতে যুক্ত। আমিরুজ্জামান পিয়াল বলেন, নির্বাচিত হলে সর্বপ্রথম তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে দীর্ঘদিনের ঝুলানো নাটকের পরিসমাপ্তি টানতে কাজ করবো।

সুপরিকল্পিত বাস্তবভিত্তিক মডেল রংপুর গড়ে তুলতে যা যা করা দরকার তা করতে কমতি রাখতে চাই না। জনগণকে সঙ্গে নিয়েই রংপুরকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করা হবে। জাসদ-ছাত্রলীগে থাকাকালীন অনেকবার হামলা ও মামলার শিকার হওয়ার পাশাপাশি আমিরুজ্জামান পিয়ালকে কারাবরণ করতে হয়েছিল। কখনোই সাজা হয়নি তার। তবে ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পর বিচ্ছিন্ন কিছু হামলার শিকার হন তিনি।

কিন্তু তার নামে কোনো মামলা নেই। বর্তমানে তিনি ইসলামী আন্দোলনের রংপুর মহানগরের সেক্রেটারি পদে রয়েছেন। আমিরুজ্জামান পিয়াল রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আগে ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনেও অংশ নিয়েছিলেন।

এবার জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগ নির্বাচনের মাঠে না থাকায় রংপুর-৩ আসনে ভোটের অংক উল্টে যেতে পারে বলে মনে করছেন তিনি। হাতপাখা প্রতীকের এই প্রার্থী তার নির্বাচনী এলাকায় প্রতিদিন উঠান বৈঠক, গণসংযোগ, সভা-সমাবেশ ও মিছিলসহ বিভিন্ন কর্মকান্ডে অংশ নিচ্ছেন।

আমিরুজ্জামান পিয়াল বলেন, নাগরিকের ন্যায্য ও মৌলিক অধিকার এবং ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করে পিছিয়ে পড়া রংপুরকে এগিয়ে নিতে চাই। এই অঞ্চলের মানুষের প্রতি রাষ্ট্রের অতীতে করা সব বৈষম্যের মূলোৎপাটন করে ন্যায্যতার ভিত্তিতে ইনসাফভিত্তিক জীবনমান নিশ্চিত করাই মূল লক্ষ্য।

পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেবে জাতীয় পার্টি
রংপুর-৩ আসনে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন ছাড়াও গণসংহতি আন্দোলনের তৌহিদুর রহমান (মাথাল প্রতীক), খেলাফত মজলিসের তৌহিদুর রহমান মন্ডল রাজু (দেয়ালঘড়ি প্রতীক), বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মাওলানা নুর আলম সিদ্দিক (রিকশা প্রতীক) এ আসন থেকে প্রার্থী হবেন। বামজোট থেকে বাসদের কেন্দ্রীয় নেতা রাজেকুজ্জামান রতন অথবা জেলা আহ্বায়ক আব্দুল কুদ্দুস প্রার্থী হতে পারেন বলে আলোচনা রয়েছে।

এখন পর্যন্ত জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে কাউকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি। আর যদি জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নেয় তবে এ আসনে দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের হবেন প্রার্থী। স্বাধীনতার পর এই আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একবার করে জয় পেলেও জাতীয় পার্টি দল গঠনের পর থেকে দখলে নেয় আসনটি।

দলটির কো-চেয়ারম্যান ও রংপুর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, জাতীয় পার্টি নির্বাচনমুখী দল। কিন্তু এখন পর্যন্ত সবার অংশগ্রহণে নির্বাচন হবে, এমন পরিবেশ সরকার নিশ্চিত করতে পারেনি। সরকার যদি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের নিশ্চয়তা দিতে পারে তখন পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত  নেবে জাতীয় পার্টি।

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement