ফিলিস্তিনের যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় পুনরায় ত্রাণবাহী নৌবহর পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে ফিলিস্তিনভিত্তিক আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলোর জোট ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি)।
বৃহস্পতিবার (২রা অক্টোবর) এক বিবৃতিতে সংস্থাটি তাদের দৃঢ় সংকল্পের কথা জানায়।
এফএফসি জানায়, নতুন এই বহরের অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে দুটি নৌযান গত ২৫শে সেপ্টেম্বর ইতালির ওৎরান্তো বন্দর থেকে গাজার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছে।
এরপর ৩০শে সেপ্টেম্বর আরও ৯টি নৌযান তাদের অনুসরণ করেছে। শিগগিরই সব নৌযান একত্রিত হয়ে একটি ঐক্যবদ্ধ বহর হিসেবে গাজার দিকে এগিয়ে যাবে। এই ১১টি নৌযানে প্রায় ১০০ জন স্বেচ্ছাসেবী ও ক্রু রয়েছেন।
২০০৮ সালে গঠিত এফএফসি জোটটি চারটি সংস্থার সমন্বয়ে গঠিত—ফ্রিডম ফ্লোটিলা ফাউন্ডেশন, গ্লোবাল মুভমেন্ট টু গাজা, মাগরেব সুমুদ ফ্লোটিলা এবং সুমুদ নুসানতারা। গত ১৭ বছরে তারা বহুবার গাজায় ত্রাণ পাঠিয়েছে।
এ নতুন ঘোষণার কয়েক সপ্তাহ আগে এফএফসির আরেকটি ত্রাণ মিশন ইসরায়েলি নৌবাহিনীর হাতে আটক হয়েছিল। গত আগস্টে 'গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা' নামে ৪৩টি নৌযান গাজায় খাদ্য ও ওষুধবাহী পাঠানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।
এতে অংশ নিয়েছিলেন সুইডেনের পরিবেশ আন্দোলন কর্মী গ্রেটা থুনবার্গ, দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি মান্ডলা ম্যান্ডেলাসহ ৪৪টি দেশের ৫০০ জন নাগরিক। এদের মধ্যে ছিলেন পার্লামেন্টারিয়ান, আইনজীবী, রাজনৈতিক আন্দোলনকর্মী এবং বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী।
৩১শে আগস্ট স্পেনের বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করার পর গাজার জলসীমার কাছাকাছি পৌঁছালে, একটি ব্যতীত সব নৌযান ইসরায়েলি নৌবাহিনী আটক করে। নৌযান, ক্রু ও আরোহীদের ইসরায়েলের বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়।
এই ঘটনার পর বিশ্বজুড়ে ব্যাপক প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ শুরু হয়, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভা তা পাত্তা দেয়নি।
এমন পরিস্থিতির মধ্যেই এফএফসি তাদের নতুন ত্রাণ বহর পাঠানোর ঘোষণা দিল, যা প্রমাণ করে যে গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানো এবং অবরোধ মুক্ত করার বিষয়ে তারা নাছোড়বান্দা। তবে এখন দেখার বিষয়, নতুন এই বহর ইসরায়েলি বাহিনীর প্রতিরোধের মুখে পড়বে কি না।
সূত্র: ফ্রিডম ফ্লোটিলা
