রংপুর অঞ্চলে ৪২ হাজার ১৩০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা

রংপুর অঞ্চলে ৪২ হাজার ১৩০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছবি: সংগৃহীত

রংপুর প্রতিনিধি

Published : ১৬:২৯, ২৫ অক্টোবর ২০২৫

উত্তারাঞ্চলে দিন দিন সবজি চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাজার দর ভাল পাওয়ায় কৃষকগণ সবজি চাষের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

রংপুর, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও নীলফামারীর বিভিন্ন উপজেলায় সারা বছর কোন না কোন সবজি উৎপাদন করছে কৃষকগণ।

সবজি চাষ করে কৃষকরা স্বাবলম্বী হচ্ছে অনেকেই। বছরের সব সময় সবজির চাহিদা খাকার কারণে বাজার মূল্য ভাল পাচ্ছে কৃষকরা।

গ্রীস্মকালিন ও শীতকালিন সবজির সাথে পরিচিত থাকলে এখন সারা বছর সবজি চাষ করছে উত্তরাঞ্চলের কৃষকরা। এ অঞ্চলের সবজি এলাকার চাহিদা মিটানোর রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে। এমন দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশে রংপুর বিভাগের উৎপাদিত সবজি।

চলতি রবি মৌসুমে রংপুর কৃষি অঞ্চলের পাঁচ জেলায় ৪২ হাজার ১৩০ হেক্টর জমিতে ১১ লক্ষ ১৯ হাজার ৮৯৩ টন শীতকালীন সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে আমন ধান কাটার সময় পুরোদমে শীতকালীন সবজি চাষ শুরু হবে।

গত বছর রবি মৌসুমে রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও নীলফামারী জেলায় ৩৯ হাজার ৭৪২ হেক্টর জমিতে ১০ লক্ষ ৩৯ হাজার ৬৯৯ টন শীতকালীন সবজি উৎপাদন করেছিল। চলতি মৌসুমে রংপুর বিভাগে শীতকালীন সবজি চাষে সরকার ইতোমধ্যে বিশেষ প্রণোদনা, উচ্চফলনশীল বীজ ও সার বিতরণসহ নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো কৃষকদের মানসম্মত বীজ, কৃষি উপকরণ ও কারিগরি সহায়তা প্রদান করছে। রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকসহ বাণিজ্যিক ব্যাংক ও কয়েকটি এনজিও সহজ শর্তে কৃষিঋণ বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে। যাতে শীতকালীন সবজি চাষ কর্মসূচি সফল হয়।

কৃষিবিদ ড.মো.মামুনুর রশিদ বলেন, চলতি মৌসুমে কৃষকরা আগের তুলনায় আরও বেশি জমিতে শীতকালীন সবজি চাষ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের কৃষকরা আগাম জাতের শীতকালীন সবজি চাষ শুরু করেছেন।

এর ফলে পরিবর্তিত জলবায়ু পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নতুন চাষ ব্যবস্থায় এসব আগাম জাতের সবজি ইতোমধ্যে বাজারে আসতে শুরু করেছে। রংপুরের রাণীপুকুর গ্রামের কৃষক আজিজুর রহমান বলেন, স্বল্পমেয়াদি জাতের আমন ধানের কেটে আগাম শীতকালীন সবজির বীজ বপন করেছেন।

কুড়িগ্রামের সাতভিটা গ্রামের সাইফুল ইসলাম এবং নয়াগ্রামের মাহবুবুর রহমান বলেন, বন্যার পানি নামার পর আগাম জাতের শীতকালীন সবজি চাষ করেছেন। কৃষকরা আশা প্রকাশ করে বলেণ, নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে তারা আগাম মৌসুমি সবজি তুলতে পারবেন, এতে অধিক মুনাফা অর্জন হবে।

রংপুর অঞ্চলের ডিএই অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভালো উৎপাদন ও ন্যায্য মূল্য পাওয়ায় কৃষকরা শীতকালীন সবজি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। তিনি আরও বলেন, আমন ধান কাটার পর কৃষকরা ইতোমধ্যে ৫ হাজার ৫৬৫ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজির বীজ বপন স¤পন্ন করেছেন।

আগামী মাস থেকেই আগাম জাতের সবজি তোলার কাজ শুরু হবে। এতে কৃষকরা বেশি লাভবান হবেন। নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে রংপুর অঞ্চলে আমন ধান কাটার সময় পুরোদমে শীতকালীন সবজি চাষ শুরু হবে।

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement