বিশ্ব সংঘাত গভীর অনিশ্চয়তা তৈরি করছে: ড. ইউনূস
Published : ০২:৩১, ২৫ অক্টোবর ২০২৫
সাম্প্রতিক বিশ্ব সংঘাতগুলো মানবতার জন্য গভীর অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
জাতিসংঘ দিবস (২৪ অক্টোবর) উপলক্ষে তিনি এক বাণীতে বলেন, “বিশ্ব শান্তি ও বহুপাক্ষিক সহযোগিতার আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের জন্য জাতিসংঘকে অবশ্যই বর্তমান বৈশ্বিক বাস্তবতার সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলতে হবে।
আমরা জাতিসংঘ সংস্কারের পক্ষে, যাতে এটি আরও গতিশীল, সমন্বিত এবং পরিবর্তনশীল বিশ্ব পরিস্থিতিতে সবার প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হয়।”
ড. ইউনূস উল্লেখ করেন, জাতিসংঘ দিবসটি হলো শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল বিশ্ব গড়ে তোলার অঙ্গীকার নতুনভাবে স্মরণ করার এক সুযোগ। একইসঙ্গে এটি বহুপাক্ষিক সহযোগিতা ও ঐকমত্যের চেতনা পুনরুজ্জীবিত করারও সময়। তিনি বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রসমূহ, অংশীদার ও সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে শুভেচ্ছা জানান।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বিগত আট দশকে জাতিসংঘের কার্যক্রমের পরিধি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বিশ্বজুড়ে সম্পৃক্ততা আরও গভীর হয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, জাতিসংঘ শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষা, মানবাধিকার সুরক্ষা এবং টেকসই উন্নয়ন ও মানবকল্যাণে এক অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। ১৯৭৪ সালে সদস্যপদ প্রাপ্তির পর বাংলাদেশ সক্রিয় ও দায়িত্বশীল সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
শান্তির সংস্কৃতির পতাকা হাতে নিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের ঝুঁকিপূর্ণ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনগুলোতে অংশগ্রহণ করেছে এবং নীল হেলমেটধারী দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষ অবদানকারী দেশ হিসেবে অবস্থান করছে। বহু সাহসী শান্তিরক্ষী সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ করেছেন বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য।
ড. ইউনূস বলেন, টেকসই উন্নয়ন, বাণিজ্য বা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশসহ বৈশ্বিক দক্ষিণের দেশগুলো নিয়মভিত্তিক বহুপাক্ষিক ব্যবস্থায় বিকশিত হয়। তবে উদ্বেগের বিষয় হলো একতরফা সিদ্ধান্ত ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বৈষম্যমূলক আচরণ, যা বিশ্বে উত্তেজনা বাড়াচ্ছে।
সাম্প্রতিক সংঘাতগুলো মানবতার জন্য গভীর অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে, বহুপক্ষীয় কূটনীতি কঠিন পরীক্ষার মুখে। চরম জাতীয়তাবাদ ও মানবিক কষ্টের প্রতি উদাসীনতা মানবজাতির দীর্ঘ সংগ্রামে অর্জিত অগ্রগতিকে ধ্বংস করছে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বের মানুষ এখন গাজার গণহত্যার সরাসরি সম্প্রচার প্রত্যক্ষ করছে। আমাদের নিজস্ব অঞ্চলেও রোহিঙ্গাদের অধিকারবঞ্চনা ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে, যা সাংস্কৃতিক পরিচয়ভিত্তিক রাজনীতির ফল। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নতুন মনোযোগ কামনা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ জাতিসংঘের সনদে কল্পিত শান্তিপূর্ণ বিশ্ব গড়ে তুলতে তার দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখবে এবং বহুপাক্ষিক সহযোগিতা ও শান্তির চেতনার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে, এ কথাও তিনি উল্লেখ করেন।
বিডি/এএন


































