কোনটি বেশি উপকারীগ্রিন, টি না কি লাল চা?

শীত হোক বা গরম, দিনটি শুরু না করেই যদি একবার চায়ের কাপে চুমুক না দেওয়া হয়, অনেকের জন্য দিনটি অসম্পূর্ণ মনে হয়। কিছু মানুষ ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য গ্রিন টি পান করেন, কেউ আবার লিকার চা ছাড়া চলতে পারেন না।

আসলে, গ্রিন টি এবং লাল চা—দুটোই ক্যামেলিয়া সিনেনসিস গাছের পাতা থেকে তৈরি, তবে প্রক্রিয়াজাত করার ধরণ অনুযায়ী এদের গুণগত বৈশিষ্ট্য ভিন্ন। এই দুটি চা স্বাস্থ্য উপকারী, তবে অতিরিক্ত গ্রহণ করলে বিপরীত প্রভাবও দেখা দিতে পারে। তাই প্রশ্ন ওঠে, সকালবেলা শরীর ও মন চাঙ্গা করতে কোন চা বেশি কার্যকর? আর কোন সময় কোন চা পানের উপযুক্ততা বেশি?

গ্রিন টি বনাম লাল চা: মূল পার্থক্য

গ্রিন টি তুলনামূলকভাবে কম প্রক্রিয়াজাত এবং এতে থাকে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, যা দেহ ও ত্বকের জন্য উপকারী। অন্যদিকে, লাল চা সম্পূর্ণভাবে অক্সিডাইজড, যার ফলে এর স্বাদ তীব্র ও সমৃদ্ধ এবং এতে ক্যাফেইনের পরিমাণ গ্রিন টি-র তুলনায় বেশি।

লাল চা: প্রতি কাপ লাল চায়ে সাধারণত ৪০–৭০ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন থাকে। এটি দ্রুত শরীরকে চাঙ্গা করে, মনোযোগ বৃদ্ধি করে এবং কর্মক্ষমতা বাড়ায়।

গ্রিন টি: প্রতি কাপ গ্রিন টি-তে ক্যাফেইন থাকে ২০–৪৫ মিলিগ্রাম। তবে এতে আছে এল-থিয়ানিন, একটি অ্যামাইনো অ্যাসিড যা মন ও শরীরকে শান্ত রাখে, ঘুমকে বিঘ্নিত না করে সজাগ রাখে।

কখন কোন চা উপযুক্ত?

সকাল বা কাজের সময়: লাল চা বেশি কার্যকর। এটি দ্রুত জাগিয়ে তোলে, কর্মক্ষমতা বাড়ায় এবং ক্লান্তি দূর করে।

বিকাল বা রাতে: গ্রিন টি সেরা পছন্দ। এটি ধীরে ধীরে মন ও শরীরকে সজাগ রাখে, তবে অতিরিক্ত উত্তেজনা তৈরি করে না, ফলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে না।

স্বাস্থ্যগুণ

গ্রিন টি: ওজন কমানো, হজম শক্তি বাড়ানো, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং ত্বকের যত্নে সহায়ক।

লাল চা: হজমে সাহায্য করে, কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় এবং একাগ্রতা বৃদ্ধি করে।

গ্রিন টি এবং লাল চা—উভয়েরই স্বাস্থ্যগুণ রয়েছে। তবে সঠিক সময়ে সঠিক চা বেছে নেওয়া বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সকালে বা চাপের সময় লাল চা, আর শান্ত সময় বা রাতে গ্রিন টি পান করলে আপনি দুই ধরনের চায়ের সর্বোচ্চ উপকার পেতে সক্ষম হবেন।