ফ্রান্সে অনিয়মিত বাংলাদেশি অভিবাসীরা পেল স্বস্তির খবর

Published : ১১:৪১, ১১ আগস্ট ২০২৫
ফ্রান্সের সাংবিধানিক কাউন্সিল বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) ঘোষণা দিয়েছে, অভিবাসীদের দীর্ঘমেয়াদি আটক রাখার বিধান ফরাসি সংবিধানের পরিপন্থী। এর আগে আইন অনুসারে, গুরুতর অপরাধে দণ্ডিত বা ‘বিশেষভাবে বিপজ্জনক’ বলে বিবেচিত ব্যক্তিদের ৯০ দিনের পরিবর্তে ২১০ দিন পর্যন্ত আটক রাখার সুযোগ ছিল। নতুন রায়ে সর্বোচ্চ সীমা আবারও ৯০ দিনে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
ফ্রান্সে বর্তমানে প্রায় এক লাখ বাংলাদেশি বসবাস করছেন, যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ অনিয়মিত অবস্থায় আছেন। দীর্ঘমেয়াদি আটক আইন চালুর পরিকল্পনায় এই কমিউনিটিতে উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল। তবে আইন বাতিলের সিদ্ধান্তে অনেকেই স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।
২০২৪ সালে ফ্রান্সে প্রায় ৪০ হাজার অভিবাসী প্রশাসনিক আটক কেন্দ্রে ছিলেন। মানবাধিকার সংগঠনগুলো দীর্ঘদিন ধরেই এই নীতির সমালোচনা করে আসছে। সাংবিধানিক কাউন্সিলের রায়ে বলা হয়েছে, কাউকে এমনভাবে আটক রাখা যাবে না যা তার ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ও মর্যাদা ক্ষুণ্ন করে।
ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রোতাইয়ো দীর্ঘমেয়াদি আটক বাড়ানোর পক্ষে ছিলেন, বিশেষ করে ২০২৪ সালে প্যারিসে এক শিক্ষার্থী হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত এক বিদেশির ঘটনাকে কেন্দ্র করে। ওই ব্যক্তি ডিটেনশন সেন্টারে দীর্ঘদিন থাকার পরও ফ্রান্স ছাড়েননি।
মানবাধিকার সংস্থা লা সিমাদ এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছে। সংস্থাটির সেক্রেটারি জেনারেল ফানেলি কারে-কন্তে বলেন, “এটি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং এই আইন সমর্থনকারীদের জন্য সতর্কবার্তা। আইন কোনোভাবেই মানুষকে তার স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করতে পারবে না।”
তবে কিছু রাজনৈতিক নেতা মনে করছেন, এই সিদ্ধান্ত ফ্রান্সের জননিরাপত্তা দুর্বল করবে, কারণ প্রতিবেশী দেশগুলোতে দীর্ঘ সময় আটক রাখার নিয়ম বিদ্যমান। তবুও সাংবিধানিক কাউন্সিল স্পষ্ট করেছে, অভিবাসীদের মৌলিক অধিকার রক্ষা করাই তাদের অগ্রাধিকার এবং আটক সময়সীমা ন্যায্য ও সীমিত রাখতে হবে।