সরকার পক্ষপাতদুষ্ট হলে নিরপেক্ষ নির্বাচন অসম্ভব : ড. ইফতেখারুজ্জা

সরকার পক্ষপাতদুষ্ট হলে নিরপেক্ষ নির্বাচন অসম্ভব : ড. ইফতেখারুজ্জা ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১০:৫৪, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য এবং ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, নির্বাচনকালীন সরকার যদি নিরপেক্ষ আচরণ না করে বরং পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে ওঠে, তাহলে কোনোভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন সম্ভব নয়।

গতকাল ধানমন্ডিতে টিআইবি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ইলেকশন ট্রেনিং কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তিনি। কর্মসূচির আয়োজন করে আরএফইডি (নির্বাচন কমিশনবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন) ও টিআইবি।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো যদি প্রকৃত অর্থে সুষ্ঠু নির্বাচন না চায়, তবে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ ভোট আয়োজন কঠিন হয়ে পড়বে। এজন্যই গণমাধ্যমকর্মী ও নির্বাচনী পর্যবেক্ষকদের নিরপেক্ষ ভূমিকা নিশ্চিত করা জরুরি।

আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ অনেক ব্যক্তি বর্তমানে প্রশাসনে সক্রিয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই বাস্তবতা মাথায় রেখেই এগোতে হবে। এবারের নির্বাচনে প্রশাসনে তিন ধরনের শক্তির দ্বন্দ্ব-টানাপোড়েনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের সামগ্রিক প্রশাসনিক কাঠামো গভর্নেন্স, জবাবদিহি, প্রাতিষ্ঠানিক স্বচ্ছতা ও সততা এসব কিছুর ভিত্তি দীর্ঘদিনের প্রক্রিয়ায় গড়ে উঠেছে। এটি কেবল গত ১৬ বছরের নয়, প্রায় ৫৪ বছরের ধারা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলীয়করণের ভেতর নিয়ে আসা হয়েছে, দ্বিগুণ দলীয় প্রভাব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এবং পেশাগত দ্বন্দ্বের সৃষ্টি করা হয়েছে। কোনো ক্ষেত্রে এসব প্রভাব কার্যকর হয়েছে, আবার অনেক ক্ষেত্রে অকার্যকর রয়ে গেছে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, অন্যদিকে যাদের দীর্ঘদিন বঞ্চিত করা হয়েছে, তারাও সুযোগ পেলে একইভাবে দলীয় প্রভাব বিস্তার করেছে। এটি অস্বীকারের উপায় নেই। তবে একইসঙ্গে কিছু কর্মকর্তা আছেন, যারা সবসময় চেষ্টা করেছেন নিরপেক্ষ থাকতে এবং পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে। তাই বলা যাবে না, প্রশাসনের সবাই পক্ষপাতদুষ্ট। তার মতে, এই তিন ধরনের শক্তির দ্বন্দ্ব ও প্রতিযোগিতার ভেতর দিয়েই প্রশাসন এগোচ্ছে এবং তারা নিজেদের মতো করে ভূমিকা রাখছে। তবে রাতারাতি পুরো ব্যবস্থাকে পাল্টে ফেলা সম্ভব নয়। এর জন্য সময় ও ধৈর্য প্রয়োজন, যাতে একটি নতুন পেশাদারিত্ব ও স্থিতিশীলতা তৈরি হয়।

ভোটকেন্দ্রে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে সাংবাদিকদের ভোটকেন্দ্রে প্রবেশাধিকার অবশ্যই নিশ্চিত রাখতে হবে। তবে সাংবাদিকদের ‘অবহিত করার’ শর্ত আরোপ করা হলে তা হয়রানির হাতিয়ার হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে তিনি সতর্ক করেন।

ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, নির্বাচন আইন ও নীতিমালায় আংশিক পরিবর্তন আনা হলেও কাঙ্ক্ষিত সংস্কার এখনো হয়নি। বিশেষ করে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকারে শর্ত আরোপ একটি বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করছে।

BD/AN

শেয়ার করুনঃ
Advertisement