রাজধানীতে হিট অফিসার বুশরার সিসা বার

রাজধানীতে হিট অফিসার বুশরার সিসা বার

The Business Daily Desk

Published : ১৫:১৭, ১২ অক্টোবর ২০২৫

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামের মেয়ে বুশরা আফরিন, যিনি এক সময় ডিএনসিসির ‘চিফ হিট অফিসার’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন, তার বিরুদ্ধে রাজধানীর গুলশানে সিসা বার পরিচালনার অভিযোগ উঠেছে। বুশরা ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম এবং এশিয়ার প্রথম নারী চিফ হিট অফিসার (Chief Heat Officer)।

সম্প্রতি দৈনিক যুগান্তর প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুলশানের কোর্ট ইয়ার্ড বাজারে অবস্থিত ‘দ্য কোর্ট ইয়ার্ড বাজার সিসা লাউঞ্জ’-এ পুলিশের অভিযানে বিপুল পরিমাণ সিসা, হুক্কা, মাদকদ্রব্য এবং নগদ অর্থ উদ্ধার করা হয়।

গুলশান থানার ওসি হাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, গত ১৯ আগস্ট দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে অভিযানে প্রায় চার কেজি সিসা, একাধিক হুক্কা সেটআপ ও বিভিন্ন মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়। এ সময় পাঁচজনকে আটক করা হয়, তবে লাউঞ্জের মালিককে পাওয়া যায়নি। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ নথিও জব্দ করা হয়েছে।

প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, জায়গাটি মূলত ক্যাটারিং ব্যবসার জন্য ভাড়া নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু পরবর্তীতে অনুমোদন ছাড়াই রেস্টুরেন্ট ও সিসা বার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এ ঘটনায় বুশরার স্বামী শরিফ আল জাওয়াদ, পরিচালক আফরোজা বিনতে এনায়েতসহ মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, শুধু কোর্ট ইয়ার্ড বাজার নয়, রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান-বনানীতে একাধিক সিসা বার রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় পরিচালিত হতো। উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে বনানীর ‘আল গিসিনো’ সিসা বার, যা পরিচালিত হতো সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার ছেলে রনি চৌধুরীর নামে; গুলশানের ‘ফারেন হাইট’ নামের সিসা বারটির পেছনে ছিলেন শেখ পরিবারের সদস্য শেখ ফারিয়া।

সরকার পরিবর্তনের পর এসব বারের অনেকগুলোর মালিকপক্ষ গা ঢাকা দিয়েছেন বলে সূত্র জানিয়েছে। এদিকে অভিযানে বন্ধ হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো পুনরায় চালু করতে এখন নানাভাবে তদবির চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

আরও জানা গেছে, ‘সেলসিয়াস’ ও ‘এক্সোটিক’ নামের দুটি সিসা বার পুনরায় খুলে দেওয়ার জন্য সম্প্রতি নারকোটিক্স কার্যালয়ে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করছেন গাড়ি ব্যবসায়ী শরিফ আল জাওয়াদ। তিনি নিজেকে বিএনপি নেতা দাবি করে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের ওপর চাপ দিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। যদিও তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর গুলশান-বনানীর অনেক সিসা বার নতুন সিন্ডিকেটের হাতে চলে গেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সূত্র। এতে অসাধু আইনজীবী, প্রভাবশালী ব্যবসায়ী, কিছু সরকারি কর্মকর্তা ও হলুদ সাংবাদিক জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে প্রশাসনিক অভিযান চালানো হলেও সিসা বারের অবৈধ ব্যবসা পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব হবে কি না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

শেয়ার করুনঃ
Advertisement