কার সঙ্গে কার বিয়ে হবে: তাকদিরের লিখন নাকি মানুষের চেষ্টা?

Published : ২১:৫৭, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
বিয়ে মানুষের জীবনকে শালীনতা, পবিত্রতা ও পূর্ণতার পথে পরিচালিত করে। মানব ইতিহাসের সূচনা থেকেই বিয়ের বিধান চলে আসছে। ইসলাম বিয়েকে শুধু সামাজিক প্রথা নয়, বরং একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হিসেবে স্থান দিয়েছে। যে ব্যক্তি প্রাপ্তবয়স্ক হয়েছে এবং আর্থিক ও শারীরিকভাবে সক্ষম, তার জন্য দেরি না করে বিয়ে করা ইমানি দায়িত্ব হিসেবে বিবেচিত।
নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, “হে যুবসমাজ, তোমাদের মধ্যে যার বিয়ের সামর্থ্য আছে, সে যেন বিয়ে করে। কেননা বিয়ে দৃষ্টি সংযত রাখে, লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। আর যার সামর্থ্য নেই, সে যেন রোজা রাখে। কেননা রোজা যৌবনের খায়েশ দমন করে।” (বোখারি: ৫০৬৫, মুসলিম: ১৪০০)
এই হাদিস থেকে স্পষ্ট হয়, বিয়ের জন্য নির্দিষ্ট কোনো দিন, মাস বা ঋতুর শর্ত নেই। বরং সামর্থ্য থাকলে দেরি না করে বিয়ে করাই শ্রেয়। তবে অনেকেই প্রশ্ন করেন—কার সঙ্গে কার বিয়ে হবে, এটি কি পূর্বনির্ধারিত নাকি মানুষের কর্মফলের ওপর নির্ভরশীল?
এ প্রসঙ্গে রাজধানীর জামিয়াতুল ইসলামিয়া বায়তুস সালাম মাদ্রাসার ফতোয়া বিভাগের প্রধান মুফতি আব্দুর রহমান হোসাইনী বলেন, কিয়ামত পর্যন্ত যা কিছু ঘটবে, সবই তাকদিরে লিখিত আছে। একজন মানুষের কার সঙ্গে বিয়ে হবে, কখন মৃত্যু ঘটবে কিংবা কোথায় কর্মজীবন কাটবে—সবকিছু আল্লাহর কিতাবে নির্ধারিত। তবে মানুষ এ সম্পর্কে অবগত নয়। তাই তাকদির পরিবর্তনের চিন্তা নিজেই অযৌক্তিক।
তবে তিনি আরও ব্যাখ্যা করেন, তাকদির নির্ধারিত হলেও শরিয়তের দৃষ্টিতে বৈধ চেষ্টা ও আন্তরিক দোয়ার মাধ্যমে পরিবর্তন বা কাম্য ফল লাভ সম্ভব। মহান আল্লাহর ইচ্ছা ও বান্দার দোয়ার মাধ্যমে তাকদিরও বদলাতে পারে।
মুফতি হোসাইনীর মতে, যদি কেউ কোনো পুণ্যবতী নারীকে বিয়ে করতে আগ্রহী হয়, তবে সামাজিক রীতি মেনে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া এবং আল্লাহর কাছে নিরন্তর দোয়া করাই কর্তব্য। কারণ আল্লাহ মানুষকে অসহায়ভাবে পাথরের মতো সৃষ্টি করেননি; বরং চেষ্টা ও উত্তম উপায় অবলম্বনের দায়িত্ব দিয়েছেন।
তিনি উপসংহারে বলেন, সুতরাং কার বিয়ে কার সঙ্গে হবে তা তাকদিরে লিপিবদ্ধ থাকলেও, চেষ্টা, বৈধ উপায় অনুসরণ এবং দোয়া ছাড়া কোনো পথ নেই।
BD/AN